সরকার গঠনের দু’মাসের মধ্যেই গণ্ডগোল, ত্রিপুরায় ভাঙতে পারে বিজেপি-আইপিএফটি জোট।

সরকার গঠনের দু’মাসের মধ্যেই ত্রিপুরায় বিজেপি ও আইপিএফটি জোট ছিন্ন হওয়ার মুখে এসে দাঁড়িয়েছে। পৃথক রাজ্যের দাবিতে ত্রিপুরাজুড়ে অশান্তি তৈরির অভিযোগ উঠছে আইপিএফটির কর্মী-সমর্থকদের। সূত্রের খবর, বিজেপি নেতৃত্ব বারবার বলার পরও সমঝোতা করতে রাজি নয় আইপিএফটি নেতৃত্ব। থানা আক্রমণ থেকে শুরু করে দফায় দফায় হামলা, বিজেপি কর্মীদের মারধর করার অভিযোগ উঠছে আইপিএফটি কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে। যার জেরে গত কয়েক দিন ধরে রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় কার্যত অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে। সমস্যা সমাধানে বিজেপি এবং আইপিএফটি’র মধ্যে সমন্বয় কমিটিও গঠিত হয়েছে। সমন্বয় কমিটির নেতৃত্বে রয়েছে উপ-মুখ্যমন্ত্রী যিষ্ণু দেববর্মা স্বয়ং। কিন্তু এরপরও পরিস্থিতির খুব একটা উন্নতি হয়নি। রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় চলছে দফায় দফায় পথ অবরোধ।
মূলত বিভিন্ন ব্লকের চেয়ারম্যান নিয়োগ নিয়ে দুই দলের বিরোধ প্রথম প্রকাশ্যে আসে। কিন্তু আইপিএফটির আসল উদ্দেশ্য পৃথক রাজ্য গঠন। এই দাবি থেকে তারা সরে আসবে না বলে ইতিমধ্যেই স্পষ্ট করেছে আইপিএফটি নেতৃত্ব। যদিও তাদের কর্মী-সমর্থকদের সংযত করার জন্য ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী আইপিএফটি’র রাজ্য সভাপতি এন সি দেববর্মাকে চূড়ান্ত সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব ঘনিষ্ঠ মহলে জানিয়েছেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না এলে আইপিএফটির সাথে জোট রাখার বিষয়ে বিবেচনা করবে বিজেপি। সূত্রের খবর, আইপিএফটি সভাপতি এবং রাজ্যের মৎস্যমন্ত্রী এন সি দেববর্মাকে স্পষ্টভাবেই এ’কথা জানিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। পরিস্থিতির উপর নজর রেখে চলেছেন বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বও। আগামী ২০ মে গুয়াহাটিতে অনুষ্ঠিত হবে উত্তর-পূর্ব ভারতের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলকে নিয়ে গঠিত নর্থ ইস্ট ডেমোক্রাটিক অ্যালায়েন্স-এর (নেডা) বৈঠক। এই বৈঠকেও আইপিএফটির নেতৃত্বকে যোগ দেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। সেখানেও পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করবেন বিজেপি নেতৃত্ব।
সূত্রের খবর, এরপরও যদি পরিস্থিতির উন্নতি না হয় এবং হিংসাত্মক আন্দোলন থেকে আইপিএফটি সরে না আসে তাহলে ছিন্ন হতে পারে বিজেপি-আইপিএফটি জোট। যদিও আইপিএফটি’র সঙ্গে জোট ছিন্ন হলেও সরকারের উপর তেমন কোনও প্রভাব পড়বে না। কারণ, ত্রিপুরায় ৬০ সদস্যের বিধানসভায় বিজেপির একারই রয়েছে ৩৬টি আসন। আইপিএফটি জিতেছে ৮টি আসনে। বিজেপির সাধারণ সম্পাদক প্রতিমা ভৌমিকের অভিযোগ, সিপিএম সমর্থকরাই দুই দলে ঢুকে জোটের মধ্যে অশান্তি তৈরি করছে। এই ব্যাপারে সতর্ক রয়েছেন বিজেপি নেতৃত্বও। যদিও সিপিএম নেতৃত্ব এই অভিযোগ খারিজ করেছে। সিপিএমের বক্তব্য, বিভ্রান্তিমূলক প্রতিশ্রুতি দিয়ে ত্রিপুরার ভোটে জিতেছে বিজেপি-আইপিএফটি জোট। নিজেদের সমস্যা মেটাতে না পেরে এখন সিপিএমের ওপর দোষ চাপানো হচ্ছে।

Leave A Reply

Your email address will not be published.