নবান্ন দখলের জংশন স্টেশন টলিউড? টলি তারকাদের নিয়ে কেন মাতোয়ারা বঙ্গ-রাজনীতি!
টলিউডকে পাশে পেতে মরিয়া বিজেপি
টলিউডকে পাশে পেতে মরিয়া বিজেপি। সেই তৎপরতার পরিচয় পাওয়া যাচ্ছে রোজই। শহরের ৫ তারা হোটেল HHI এর একটি অংশ ভাড়া নিয়েছে বিজেপি। সেখানে বিলাসবহুল মিডিয়া সেন্টারে নিয়ম করে টলি তারকাদের দলে যোগ দেওয়াচ্ছে তারা। এই প্রেক্ষিতে প্রশ্ন উঠছে, বাংলা দখলে মরিয়া গেরুয়া শিবির হঠাৎ করে টলিউডকে নিশানা করল কেন?
২০১১ সালে পরিবর্তনের খানিক আগে থেকেই টালিগঞ্জ ইন্ডাসট্রি মমতার দিকে ঝুঁকে। যদিও বাম প্রভাবকে অস্বীকার করা যায়নি কোনও দিন। কিন্তু ২০২১ ভোটের আগে সেই চিরাচরিত ধারণায় এসেছে বড়োসড় বদল। টালিগঞ্জের তারকারা দল বেঁধে গেরুয়া শিবিরে নাম লেখাচ্ছেন। এখন প্রশ্ন হল, রাতারাতি তারকাদের রাজনীতিতে নামার সাধ হল কেন? পাশাপাশি উঠছে আরও একটি প্রশ্ন, রাজনীতিতে নামাই উদ্দেশ্য নাকি নেপথ্যে আছে অন্য সমীকরণ?
একবার সিপিএমের সদস্যপদ নিতে আলিমুদ্দিন পৌঁছে গিয়েছিলেন আজন্ম বামপন্থী সৌমিত্র চ্যাটার্জি। মুজফফর আহমেদ ভবনে সেদিন সৌমিত্র পড়েছিলেন জ্যোতি বসুর মুখোমুখি। শোনা যায়, জ্যোতি বাবু সৌমিত্র চ্যাটার্জিকে বলেছিলেন, পার্টি সদস্যপদ নেবেন কেন, আপনি যে কাজ করছেন সেটা করেই মানুষের আরও কাছাকাছি পৌঁছতে পারবেন। বামপন্থী মানসিকতা বজায় রেখে যেটা করছেন করে যান। তারপর আদি গঙ্গা দিয়ে বহু জল বয়ে গিয়েছে। জ্যোতি বাবু প্রয়াত হয়েছেন। নেই সৌমিত্র চ্যাটার্জিও। বদলে গিয়েছে অভিনেতাদের রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার প্রেক্ষাপট ও প্রয়োজনীয়তা।
একটা সময় বামেদের হয়ে ভোটে লড়েছিলেন অভিনেতা অনিল চ্যাটার্জি। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, তাঁকে কিন্তু একবারও বলতে শোনা যায়নি দলে থেকে কাজ করতে পারছি না। ইদানীং সেটাই ট্রেন্ড!
[আরও পড়ুন- এখনই বিজেপিতে যোগ দিচ্ছি না বলে মমতার ছবি শেয়ার! কোন দিকে সায়নী ঘোষ?]
সোমবার তাজ বেঙ্গল হোটেলে কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী প্রকাশ জাভরেকরের সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হয় কার্যত গোটা টলিউড। মুখে অরাজনৈতিক বলে দাবি করলেও ভোটের মুখে টলি তারকাদের নিয়ে খোস গল্প করছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এমনটা মনে করা কঠিন। ওয়াকিবহাল মহল বলছে, বৈঠক নেহাত সৌজন্যমূলক হলেও মন্ত্রী ও তারকাদের এক ছাঁদের তলায় উপস্থিতি আসলে নিঃশব্দ রাজনৈতিক বিবৃতি।
কিন্তু প্রশ্ন হল, বাংলা দখলের লক্ষ্যে টলি তারকাদের কেন অপরিহার্য ভাবছে বিজেপি? রাজনীতির প্রতি অন্য জগতের সফল মানুষের দায়বদ্ধতা নিয়ে বারেবারে প্রশ্ন উঠেছে। এবার কি তার ব্যতিক্রম হবে বলে মনে করছে গেরুয়া শিবির? তাই কি হিরণ থেকে যশ, রিমঝিম মিত্র থেকে পাপিয়া অধিকারী, দল বেঁধে যোগ দিয়েছেন বিজেপিতে? তাঁরা কি অভিনয় ছেড়ে ফুল টাইম রাজনীতিবিদ হবেন? এখানেই উঠছে আরও গভীর প্রশ্ন, অভিনেতারাই যদি রাজনীতি করেন তাহলে অভিনয় করবে কে?
Comments are closed.