দেশজুড়ে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতায় আন্দোলন অব্যাহত। মঙ্গলবার কেরল বিধানসভায় এই আইন বাতিলের প্রস্তাব পাশ করেছে পিনারাই বিজয়ন সরকার। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যগুলিকে সম্পূর্ণ উপেক্ষা করে অনলাইনে নাগরিকত্ব আইন কার্যকর করার কথা ভাবছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। পিটিআই সূত্রে খবর, রাজ্য সরকারগুলিকে এড়িয়ে আইন প্রয়োগ করার জন্য এই পরিকল্পনা।
বর্তমান আইন অনুযায়ী, জেলাশাসকের মাধ্যমে নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে হয়। সূত্রের খবর, এই পুরো বিষয়কে এড়িয়ে গিয়ে নাগরিকত্বের জন্য আবেদন, তথ্য যাচাই এবং নাগরিকত্ব প্রদান-এই পুরো বিষয়টি অনলাইনে করার কথা ভাবছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। সেক্ষেত্রে রাজ্যগুলি আর হস্তক্ষেপ করতে পারবে না বলে মনে করছেন অমিত শাহরা।
প্রসঙ্গত, সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে দেশজুড়ে বিক্ষোভ ও আন্দোলনের আবহে অমিত শাহ মন্তব্য করেছিলেন, তিনি জানতেন বিরোধিতা হবেই। তবে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হুঁশিয়ারি ছিল, আইন কীভাবে প্রয়োগ করতে হয়, সেটাও তাঁর সরকার জানে। ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা, তখনই নাগরিকত্ব আইনকে অনলাইনে কার্যকর করার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
অমিত শাহের মন্ত্রক বারবার বলে এসেছে, প্রতিরক্ষা, বিদেশ ও নাগরিকত্বের বিষয়গুলি কেন্দ্রের অধীনে, এতে হস্তক্ষেপের কোনও এক্তিয়ার নেই রাজ্য সরকারের। যদিও পশ্চিমবঙ্গ সহ কেরল, পঞ্জাব, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড়ের মতো অ-বিজেপি শাসিত সরকারগুলি হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছে, কেন্দ্রের এই ‘অসাংবিধানিক’ আইন কোনওভাবেই প্রয়োগ করা হবে না তাদের রাজ্যে। তারা বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের অ-মুসলিম সম্প্রদায়ের শরণার্থীকে এ দেশে নাগরিকত্ব দেওয়াকে সংবিধানের বিরোধী বলে অভিযোগ করছে। বুধবার তৃণমূলের প্রতিষ্ঠা দিবসেও মমতা ট্যুইটে লেখেন, মানুষের স্বার্থে বিজেপির নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে তাঁদের এই আন্দোলন জারি থাকবে। এদিন রাজ্যজুড়ে নাগরিক দিবস পালন করছে রাজ্যের শাসক দল। এই আন্দোলনগুলিকে এড়িয়ে সংশোধনী নাগরিকত্ব আইন লাগু করার ব্যাপারে মরিয়া মোদী সরকার। তাই অনলাইনের মাধ্যমে নাগরিকত্ব আইন কার্যকর করার কথা ভাবছেন নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহরা।
Comments are closed.