কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে কারও নাম ছাড়াই আমন্ত্রণপত্র, রাজ্যপাল যাবেন কি?

ক’দিন আগেই শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চ্যাটার্জি বলেছিলেন, ২৮ জানুয়ারি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠান হবে রাজ্যপাল তথা আচার্য জগদীপ ধনখড়কে ছাড়াই। সমাবর্তনের আমন্ত্রণপত্র শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্যকেই মান্যতা দিল।
সমাবর্তন অনুষ্ঠানে কারা কারা অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন, আমন্ত্রণপত্রে তার কোনও উল্লেখ নেই। রাজভবন বা উচ্চশিক্ষা দফতর থেকে রাজ্যপালের উপস্থিতির ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়কে কিছু জানানো হয়নি। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তিনি মঞ্চে থাকবেন কি না, তা পরিষ্কার নয়। তবে মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয় সূত্রের খবর, ওইদিন তিনি পৌঁছে যেতেও পারেন।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে রাজ্যপাল যেতে পারেননি। তুমুল বিক্ষোভের জেরে তিনি গেটেই আটকে পড়েন। প্রায় দেড় ঘণ্টা ঘেরাও হয়ে থাকার পর রাজ্যপাল ফিরে যেতে বাধ্য হন। এর জন্য তিনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এবং রাজ্য সরকারকে দায়ী করে বলেছিলেন, তাদের মদতেই ওই বিক্ষোভ হয়েছে। ওই বিক্ষোভ চলাকালীনই কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেনেট বৈঠক করে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক ব্যানার্জিকে সাম্মানিক ডিলিট দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্যপালের অনুপস্থিতিতে। রাজ্যপাল ওই সেনেট বৈঠকেও থাকতে পারেননি।
সম্প্রতি রাজ্য সরকার যে উচ্চশিক্ষা বিধি এনেছে, তাতে রাজ্যপালকে সরাসরি বিশ্ববিদ্যালয়গুলির ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করতে নিষেধ করা হয়েছে। এমনকি তাঁকে উপাচার্যদের সঙ্গেও সরাসরি কথা বলতে বারণ করা হয়েছে। ওই বিধিতে বলা হয়েছে, উচ্চশিক্ষা দফতরের মাধ্যমে রাজ্যপাল এবং উপাচার্যদের মধ্যে যোগাযোগ করতে হবে। রাজ্যপাল এই বিধিরও তীব্র নিন্দা করেছেন।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দেবাশিস দাস  বলেন, আমন্ত্রণপত্রে নাম থাকতেই হবে, এমন কোনও বাধ্যবাধকতা নেই। এবার আমরা কারও নাম ছাড়াই কার্ড ছাপিয়েছি। তা হলে এবার দীক্ষান্ত ভাষণ দেবেন কে? বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, নোবেলজয়ী অভিজিৎ-ই দীক্ষান্ত ভাষণ দিতে পারেন। এখন দেখার বিষয় হল, ওইদিন রাজ্যপাল কী করেন? তিনি যাদবপুরের সমাবর্তনে যাবেন বলে আগের দিনই জানিয়েছিলেন। ২৪ ডিসেম্বর রাজ্যপাল বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটে পৌঁছেও গিয়েছিলেন। কিন্তু তৃণমূল সমর্থক শিক্ষাবন্ধু সমিতির প্রবল বাধা ও ঘেরাও কর্মসূচির ফলে তিনি সমাবর্তনস্থলে ঢুকতে পারেননি। পরে রাজ্যপাল ফিরে আসেন। প্রশ্ন উঠেছে, রাজ্যপাল কি ২৮ জানুয়ারি কলকাতার সমাবর্তনে নজরুল মঞ্চে যাবেন?

Comments are closed.