অস্বাভাবিক বিদ্যুৎ বিল নিয়ে ক্ষোভ, অ্যাডভাইজারি পাঠিয়ে এক মাসের মধ্যে সমস্যা সমাধানের নির্দেশ রাজ্যের
বিদ্যুতের অস্বাভাবিক বিল নিয়ে সিইএসসি-র বিরুদ্ধে ক্ষোভের পারদ চড়ছে। এই প্রেক্ষিতে ক্যালকাটা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কর্পোরেশন (CESC) কে অ্যাডভাইজরি দিচ্ছে রাজ্য সরকার। অ্যাডভাইজরিতে বলা হচ্ছে, ভুল সংশোধনের জন্য এক মাস সময় পাবে তারা। এই একমাস বিলের টাকা নেওয়া যাবে না এবং বিল মেটাতে না পারলে কারও লাইন কাটা চলবে না।
শুক্রবার রাজ্যের বিদ্যুতমন্ত্রী শোভনদেব চ্যাটার্জি সিইএসসি কর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন, কোন নিয়মে এবং কোন হিসেবের মাধ্যমে বিদ্যুৎ বিল তৈরি করা হচ্ছে, তার বিস্তারিত ও সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা দিয়ে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সংবাদমাধ্যমে বিজ্ঞাপন দিতে হবে। অর্থাৎ, শনিবারই সেই বিজ্ঞাপন দেওয়ার দিন।
ঘূর্ণিঝড় আমপানের পর আলো-জলের পরিষেবা না পেয়ে বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ হয়েছিল। এরপর বিদ্যুতের অস্বাভাবিক বিল নিয়ে তেমনই বিক্ষোভ শুরু হচ্ছে কলকাতার বুকে। সিইএসসির বিরুদ্ধে ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, ট্যুইটার ইত্যাদি সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিবাদ হচ্ছে। তাতে সরব হয়েছেন টলিউডের একাধিক অভিনেতা ও বিখ্যাত ব্যক্তিত্ব। তেমনি করোনা পরিস্থিতির মধ্যে কিছু জায়গায় রাস্তায় নেমেও মানুষ বিক্ষোভ দেখিয়েছেন সিইএসসি-র বিরুদ্ধে। এমনকী বিদ্যুৎমন্ত্রীর বাড়িতে গিয়েও অভিযোগ জানাচ্ছেন অনেকে। তাঁদের প্রশ্ন, যতই গরম পড়ুক আর সবাই ঘরবন্দি থাকুন, বিদ্যুতে এত খরচ হয় কী করে? কারও বিল এসেছে ১০ হাজার তো কারো ১২ হাজার টাকা!
বিদ্যুতমন্ত্রী জানিয়েছেন, এই সব প্রশ্ন ও ধন্দের জবাব পেতে সিইএসসির কাছে বিল নিয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে। কোন স্ল্যাব নেওয়া হচ্ছে, কেন নেওয়া হচ্ছে, তার জন্য টাকা বাড়ল কি না ইত্যাদি বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়ে সংবাদমাধ্যমে বড় বিজ্ঞাপন দিতেও বলা হয়েছে।
সিইএসসি-র তরফে অবশ্য প্রাথমিক প্রতিক্রিয়ায় বলা হচ্ছে, লকডাউনের মধ্যে গত দুমাস মিটার রিডিং না নেওয়ায় আগের ছমাসের গড় প্রভিশনাল বিল পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু আনলক পর্বে মিটার রিডিং নেওয়া শুরু হয়েছে। ফলে বিদ্যুৎ খরচের ঠিক হিসেব মিলছে। তাই অনেকের বিল বেশি হচ্ছে। রাজ্যে বিদ্যুৎ গ্রাহকদের সংগঠন অ্যাবেকার দাবি, অন্যায্যভাবে গ্রাহকের একাংশকে উঁচু স্ল্যাবে ঢুকিয়ে দেওয়ার ফলেই এই পরিণতি। সিইএসসি সেই অভিযোগও মানতে নারাজ। তবে এবার সরাসরি রাজ্য সরকার হস্তক্ষেপ করায় বিলের ভার কমে কি না, সমস্যার সুরাহা হয় কি না সেটাই দেখার।
Comments are closed.