জেলায় কুটির শিল্পের মতো অস্ত্র, আগেয়াস্ত্রের কারখানা গড়ে উঠেছে, নামখানার প্রশাসনিক বৈঠকে পুলিশকে এক হাত মুখ্যমন্ত্রীর
দক্ষিণ ২৪ পরগানার প্রশাসনিক বৈঠক থেকে জেলা পুলিশকে এক হাত নিলেন মুখ্যমন্ত্রী। বৃহস্পতিবার নামখানায় জেলা প্রশানিক মিটিংয়ে পুলিশের ভূমিকার সমালোচনা করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, কুটির শিল্পের মতো আগ্নেয়াস্ত্র, বিস্ফোরক তৈরি হচ্ছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বেশ কিছু জায়গায়। এব্যাপারে পুলিশ প্রশাসনকে নজর দিতে হবে।
প্রশাসনিক বৈঠকে তৃণমূলের এক নেতা মুখ্যমন্ত্রীকে বলেন, স্থানীয় এক নেতার বাবা খুন হওয়ার এতদিন বাদেও কোনও ব্যবস্থা নিতে পারেনি পুলিশ। এব্যাপারে পুলিশ কর্তাদের কাছে তদন্তের কী অগ্রগতি জানতে চান মুখ্যমন্ত্রী। আমতা আমতা করে পুলিশ আধিকারিকরা সাফাই দেন, বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তদন্ত চলছে। এর পরই পুলিশের ভূমিকার সমালোচনা করে পুলিশ কর্তাদের ধমক দেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, আপনারা কী করছেন কিছুই তো বোঝা যাচ্ছে না।
পাশাপাশি, দলীয় কর্মী ও সরকারি আমলাদের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রীর কটাক্ষ, রাস্তায় যাওয়ার সময় গরিব মানুষ চোখে পড়ে না আপনাদের? বাংলার আবাস যোজনায় সব গরিব মানুষ যাতে সুবিধা পান তা দেখতে হবে। আর এই সুবিধার বিনিময়ে যদি কোনও দুর্নীতি হয়, তার জন্য সরকার কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। দলীয় নেতাদের উদ্দেশে মমতার বার্তা, বাড়িতে না বসে থেকে মানুষের বাড়ি বাড়ি যান, হাঁটলে শরীর ভালো থাকে।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার মৎস্যজীবীদের সুবিধার দিকে বিশেষ নজর দিতে হবে বলে পরামর্শ মুখ্যমন্ত্রীর। তিনি মৎস্যজীবীদের আধুনিক পদ্ধতিতে মৎস্য চাষ শেখানো ও রঙিন মাছ চাষে জোর দেওয়ার কথা বলেন। পাশাপাশি, যে মৎসজীবীরা সমুদ্রে মাছ ধরতে গিয়ে মারা যান বা নিখোঁজ হন তাঁদের পরিবারকে বিমার আওতায় আনার ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। বর্ধমানের ল্যাংচা হাবের মতো দক্ষিণ ২৪ পরগনায় জয়নগরের মোয়ার হাব গড়ার কথা বলেন তিনি।
সেই সঙ্গে বুধবারের মতোই কেন্দ্রের সমালোচনা করে এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, উন্নয়নের টাকা দেয় রাজ্য, নাম হয় কেন্দ্রের। সড়ক যোজনা, কৃষি যোজনায় অধিকাংশ টাকা দেয় রাজ্য সরকার, কিন্তু নাম কুড়োচ্ছে কেন্দ্র। ফসল বিমা যোজনায় ছোট্ট অংশ দেয় কেন্দ্র। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, দরকার হলে কৃষকদের সরাসরি টাকা দেব। ৮০ টাকা দিতে পারলে, বাকি ২০ টাকাও দিতে পারব। অনেক দালালি হয়েছে। আর বরদাস্ত করব না।
Comments are closed.