লকডাউনের থাবায় মে থেকে অগাস্ট মাসের মধ্যে দেশে কাজ হারিয়েছেন প্রায় ৬৬ লক্ষ দক্ষ ও পেশাদার কর্মী। চাঞ্চল্যকর তথ্য সেন্টার ফর মনিটরিং ইন্ডিয়ান ইকোনমি বা CMIE এর।
কাজের বাজারে যাকে ‘হোয়াইট কলার জব’ বলে, যাদের মধ্যে রয়েছেন ইঞ্জিনিয়র, চিকিৎসক, শিক্ষক, হিসাব রক্ষক ও অ্যানালিস্ট সহ বিভিন্ন পেশার মানুষ। এঁরা সরকারি, বেসরকারি উভয় ক্ষেত্রেই কাজ করেন। সহজ কথায় বললে যে কর্মীরা অফিসে বসে কাজ করেন। এরকম ৬৬ লক্ষ ‘হোয়াইট কলার জব’ করা মানুষ গত চার মাসে কাজ খুইয়েছেন বলে জানিয়েছে CMIE।
সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের মে থেকে অগাস্টে দেশে হোয়াইট কলার কর্মীর সংখ্যা ছিল ১ কোটি ৮৮ লক্ষ। ২০১৯ এর সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে এই সংখ্যাটা ছিল প্রায় সমান। কিন্তু চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এপ্রিলের মধ্যে হোয়াইট কলার জবের সংখ্যা কিছুটা কমে হয় ১ কোটি ৮১ লক্ষ। ঠিক যখন শিল্পক্ষেত্রে করোনা সংক্রমণ এড়াতে লকডাউনের আংশিক প্রভাব পড়তে শুরু করেছে।
CMIE এর সিইও মহেশ ভ্যাস বলেন, মে থেকে অগাস্টে এইসব দক্ষ কর্মী ও পেশাদারের সংখ্যা কমে হয়েছে ১ কোটি ২২ লক্ষ। যা ২০১৬ সালের পর সবচেয়ে কম। এই ক্ষেত্রের কর্মী নিয়োগ গত চার বছরে যেভাবে বৃদ্ধি পেয়েছিল, তা গত কয়েক মাসে একরকম ধূলিসাৎ হয়ে গিয়েছে।
হোয়াইট কলার জবের পর সবচেয়ে যাঁদের কাজ প্রভাবিত হয়েছে সেটা হল কারখানা কর্মী বা ব্লু কলার কর্মীদের। সব মিলিয়ে এক বছরের মধ্যে শিল্প ক্ষেত্রে কর্মসংস্থান কমেছে প্রায় ২৬ শতাংশ।
বিশেষত ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্পক্ষেত্রের কর্মীদের চাকরিতে বেশি কোপ পড়েছে। বড় সংস্থার হোয়াইট কলার ক্লারিক্যাল পোস্ট, অর্থাৎ যাঁরা ডেস্ক জব করেন, তাঁদের চাকরিতে খুব একটা প্রভাব পড়েনি বলে জানাচ্ছে CMIE। লকডাউনের ফলে ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’ ওই কর্মীদের শিফট করার ফলেই এই ফল বলে মনে করা হচ্ছে।
CMIE এর তথ্য থেকে আরও জানা যাচ্ছে, ২০১৯-২০ তে দেশে মাস মাইনে পাওয়া মোট কর্মীর সংখ্যা ছিল ৮ কোটি ৬১ লক্ষ। ২০২০ সালের এপ্রিলে তা কমে হয়েছে ৬ কোটি ৮৪ লক্ষ। জুলাইয়ে তা আরও কমে ৬ কোটি ৭২ লক্ষে এসে ঠেকেছে।
বেতন নির্ভর চাকরির ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে হোয়াইট কলার কর্মীদের। যাঁদের পেশাগত ডিগ্রি ও দক্ষতা রয়েছে এবং যাঁরা বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত ছিলেন।
Comments are closed.