‘উর্দি’ পড়ে আরএসএসের অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়া আইপিএস অফিসারকে রাজ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনীর পর্যবেক্ষক নিয়োগ, তীব্র আপত্তি জানিয়ে কমিশনে তৃণমূল
লোকসভা নির্বাচন চলাকালীন এ রাজ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনীর গতিবিধি ও মোতায়েন সংক্রান্ত তদারকির ভার দেওয়া হল বিএসএফের প্রাক্তন ডিজি কে কে শর্মাকে, যাঁকে কলকাতাতেই দেখা গিয়েছিল আরএসএসের অনুষ্ঠানে।
পশ্চিমবঙ্গ এবং ঝাড়খণ্ডের স্পেশাল সেন্ট্রাল পুলিশ অবজার্ভার হিসেবে তাঁকে নিযুক্ত করেছে নির্বাচন কমিশন। মঙ্গলবার কমিশনের এই সিদ্ধান্ত প্রকাশ্যে আসতেই প্রবল আপত্তি তুলেছে তৃণমূল। তৃণমূলের অভিযোগ, ২০১৮ সালে কলকাতার মানিকতলায় আরএসএস-এর শাখা সংগঠন সীমান্ত চেতনা মঞ্চের অনুষ্ঠানে কে কে শর্মাকে দেখা গিয়েছিল ইউনিফর্ম পরা অবস্থায়। এই কে কে শর্মাকে এ রাজ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনীর অবজার্ভারের ভার দেওয়ায় ক্ষুব্ধ তৃণমূল।
মঙ্গলবার রাতেই বিএসএফের প্রাক্তন ডিজির আরএসএসের অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার সেই ছবি ট্যুইটারে পোস্ট করে প্রতিবাদ জানিয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় মুখপাত্র ডেরেক ও’ব্রায়েন। ছবিটিতে দেখা যাচ্ছে, পুলিশি ইউনিফর্মে আরএসএসের শাখা সংগঠনের মঞ্চে উপস্থিত রয়েছেন কে কে শর্মা। ওই মঞ্চে আবার উপস্থিত রয়েছেন এবার হাওড়ার বিজেপি প্রার্থী রন্তিদেব সেনগুপ্ত। কে কে শর্মার নিয়োগকে পক্ষপাতমূলক বলেই দাবি করছে তৃণমূল নেতৃত্ব। তৃণমূল নেতা ফিরহাদ হাকিম বলেন, নির্বাচন কমিশনে এ নিয়ে অভিযোগ জানাবেন তাঁরা। তাঁর কথায়, কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে তৃণমূলের কোনও আপত্তি নেই। কিন্তু, কে কে শর্মার মতো একজনকে স্পেশাল সেন্ট্রাল পুলিশ অবজার্ভার পদে নিয়োগ করায় বিজেপির ‘এজেন্ডা’ সুস্পষ্ট হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নির্বাচন কমিশন এক বিবৃতিতে জানায়, পশ্চিমবঙ্গ এবং ঝাড়খণ্ডের জন্য বিএসএফের প্রাক্তন ডিজি কে কে শর্মা এবং ত্রিপুরা ও মিজোরামের জন্য অবসরপ্রাপ্ত আইপিএস অফিসার মৃণালকান্তি দাসকে স্পেশাল সেন্ট্রাল পুলিস অবজার্ভার হিসেবে নিয়োগ করা হচ্ছে। এই ঘোষণার পরেই তীব্র প্রতিক্রিয়া জানায় তৃণমূল শিবিরর।
২০১৮ সালেও কে কে শর্মার উর্দি পরে আরএসএসের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছিল তৃণমূল শিবির। কর্তব্যরত অবস্থায় কীভাবে একজন আইপিএস অফিসার রাজনৈতিক দলের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পারেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল।
রাজ্যের বিভিন্ন নির্বাচনে আইপিএস বা আইএসএস অফিসারকে বিশেষ দায়িত্ব দিয়ে নিযুক্ত করা নিয়ে অতীতে একাধিকবার বিতর্ক হয়েছে। বিশেষ করে ২০০৪ সালে লোকসভা নির্বাচনে বাংলায় দায়িত্বপ্রাপ্ত আফজল আমানুল্লা কিংবা তার পরে কে জে রাও’কে নিয়েও কম বিতর্ক হয়নি। কিন্তু এবার যাঁকে বিশেষ দায়িত্ব দিয়ে নিয়োগ করা হয়েছে, তাঁর মতো আরএসএসের অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার অতীত কারও ছিল না।
Comments are closed.