অক্সিজেনের অভাব। ফিরিয়ে দিয়েছে উত্তরপ্রদেশের একের পর হাসপাতাল। শেষ পর্যন্ত ৮৫০ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে উত্তরপ্রদেশ থেকে বাংলার মাটিতে বাঁচল প্রাণ। বেড পেলেন দম্পতি, চলছে চিকিৎসা।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, আদতে উত্তরপ্রদেশের অযোধ্যার বাসিন্দা লালজি যাদব আর রেখা যাদব নামে ওই দম্পতি যখন হাসপাতালে এসেছিলেন, তখন তাদের অবস্থা শোচনীয় ছিল। প্রবল শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন তাঁরা। বর্তমানে লালজির অবস্থা সংকটজনক। তুলনায় ভালো রেখা যাদব।
রেখার ভাই রবিশঙ্কর জানিয়েছেন, বাংলায় না আনলে দিদি, জামাইবাবুকে বাঁচাতে পারতাম না। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিকে ধন্যবাদ।
গোটা দেশে অক্সিজেনের সংকট। যোগী রাজ্যেও চলছে অক্সিজেনের আকাল। সেই পরিস্থিতিতে সেখানকার সরকারি ও বেসরকারি মিলিয়ে ৬টি হাসপাতালে ঘোরার পরেও অক্সিজেন জোগাড় করতে পারেননি যাদব দম্পতি। প্রাণের আশা যখন প্রায় ছেড়ে দিয়েছেন তখন ফোন আসে ভাই রবিশঙ্করের। ভাই জানান বাংলায় ব্যবস্থা হয়ে যাবে। দেরি না করে দিদি যেন জামাইবাবুকে নিয়ে হুগলি রওনা দেন। আর দেরি করেননি যাদব দম্পতি। ৬০ হাজার টাকা খরচ করে সেই অ্যাম্বুলেন্স নিয়েই তাঁরা বাংলায় রওনা দেন। প্রায় ২৪ ঘণ্টা পর তাঁরা পৌঁছন হুগলির মগরায় আত্মীয়ের বাড়ি। সেখান থেকে সোজা চুঁচুড়ার অজন্তা সেবা সদন।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ১০ দিন ধরে জ্বর, সর্দি-কাশিতে ভুগছিলেন লালজি আর রেখা। এরপর শুরু হয় শ্বাসকষ্ট। সেখানকার হাসপাতালে কোভিড টেস্ট করার পর রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। কিন্তু শ্বাসকষ্ট ক্রমেই বাড়তে থাকে। কিন্তু একের পর এক হাসপাতালে অক্সিজেনের অভাবে ভর্তি করা যায়নি তাঁদের।
রেখার ভাই রবিশঙ্করের দাবি, উত্তরপ্রদেশে করোনা টেস্টেও গোঁজামিল দেওয়া হচ্ছে। না হলে দিদি-জামাইবাবুর কী করে নেগেটিভ রিপোর্ট আসে? অথচ চুঁচুড়ার হাসপাতালে প্রথম পরীক্ষাতে তাঁরা দুজনেই করোনা পসিটিভ!
৮৫০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দেওয়াও মোটেই সহজ ছিল না। জানা গিয়েছে, অক্সিজেনের পরিমাণ কমে আসায় স্বামী-স্ত্রী পালা করে অক্সিজেন ব্যবহার করছিলেন। ভয় ছিল মাঝপথে অক্সিজেন শেষ হয়ে যাওয়ারও। তবে সে সব এড়িয়ে রেখা ও লালজি যে শেষ পর্যন্ত বাংলায় পৌঁছতে পেরেছেন, সেটাই নিশ্চিন্ত করেছে ভাই রবিশঙ্করকে।
Comments are closed.