নবীন এবং প্রবীণ দুই প্রজন্মে ভর করে মিশন মেদিনীপুর সাজিয়েছে আলিমুদ্দিন। পশ্চিম মেদিনীপুরের শালবণি কেন্দ্রে বামেরা প্রার্থী করেছে বহু যুদ্ধের পোড় খাওয়া রাজনীতিক সুশান্ত ঘোষকে। ১৯৮৭ সালে প্রথম বিধায়ক নির্বাচিত হন সুশান্ত। তারপর ২০১৬ সাল পর্যন্ত দু’দশক বিধানসভার সদস্য তিনি। সপ্তম বামফ্রন্ট সরকারের মন্ত্রীও ছিলেন। সাফল্যের সঙ্গে সঙ্গে এসেছে বিতর্কও। রাজনৈতিক জীবনের ছন্দপতন হয় ২০১১ এর অগস্টে। বেনাচাপড়া কঙ্কাল কাণ্ডে গ্রেফতার হন সুশান্ত ঘোষ। ছয় মাস জেল বন্দির পর মুক্তি পেলেও অনুমতি পাননি গড়বেতায় ফেরার। অবশেষে গত বছর নভেম্বরে এলাকায় ফেরার অনুমতি পান। বহু ভোট যুদ্ধের পোড় খাওয়া সৈনিক সুশান্ত ঘোষকে সামনে রেখেই সিপিএম পশ্চিম মেদিনীপুরে পরিকল্পনা সাজিয়েছে।
ঝাড়গ্রাম সদর থেকে সিপিএম প্রার্থী করেছে যুবনেত্রী মধুজা সেন রায়কে। তবে সিপিএম-এর অন্যান্য তরুণ প্রার্থীদের মত মধুজা এই প্রথম ভোটে লড়ছেন না। এর আগে ২০১৬ সালে টালিগঞ্জ কেন্দ্র থেকে সিপিএম প্রার্থী হিসেবে লড়ে হেরে যান তিনি। প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী মধুজা। পেশা, সর্বক্ষণের পার্টি কর্মী। ঝাড়গ্রামের মেয়ে মধুজার বড় হয়ে ওঠা বাম পরিমণ্ডলে। ভালোবাসেন বই পড়তে। ঝাড়গ্রামের সিপিএম প্রার্থীর পাশাপাশি মধুজার আর একটি পরিচয়, তিনি প্রসিদ্ধ বাচিক শিল্পী।
প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করার সময় বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু বলেছিলেন নন্দীগ্রাম এখন ‘হটস্পট’। ২০২১ এর নির্বাচনের সেই ‘হটস্পট’ নন্দীগ্রাম থেকে এবারে সিপিএম প্রার্থী লড়াকু যুবনেত্রী মীনাক্ষী মুখার্জি। আসনসোলের কুলটির মেয়ে মীনাক্ষী। আসানসোলের বিবি কলেজ থেকে গ্র্যাজুয়েশন এবং পলিটিক্যাল সায়েন্সে মার্স্টার্স করেছেন বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। মমতা ব্যানার্জি, শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে প্রার্থী হওয়ার আগে থেকেই রাজ্য রাজনীতিতে পরিচিত মুখ DYFI এর রাজ্য সভানেত্রী মীনাক্ষী মুখার্জি। জ্বালাময়ী বক্তব্য রাখার জন্য ইতিমধ্যেই বাম সমর্থকদের মধ্যে বেশ জনপ্রিয় মীনাক্ষী। বাম ছাত্র যুবর নবান্ন অভিযানে মীনাক্ষীকে দেখা গিয়েছিল এক্কেবারে সামনের সারিতে। পুলিশের লাঠির আঘাত থেকে তাঁর সতীর্থকে আগলে রাখার ছবি ব্যাপক সাড়া ফেলেছিল। এহেন মীনাক্ষী এবারে লড়বেন রাজ্য রাজনীতির দুই সবথেকে হেভিওয়েট নেতা, নেত্রীর বিরুদ্ধে।
[আরও পড়ুন- দিদি তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে ওঠ! ছোট্ট সুহানাকে জড়িয়ে ধরে আদর মমতার]
২০১৬ সালে নন্দীগ্রাম বিধানসভায় বাম ফ্রন্টের সিপিআই প্রার্থী পেয়েছিলেন ৫৩,৩৯৩ টি ভোট, যেখানে তৎকালীন তৃণমূল প্রার্থী শুভেন্দুর প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যা ১ লক্ষ ৩৪ হাজার ৬২৩। তারপর কেটে গিয়েছে দীর্ঘ পাঁচ বছর। লোকসভা ভোটের পর রাজ্যের প্রধান বিরোধী শক্তি হিসেবে উঠে এসেছে বিজেপি। তৃণমূলের প্রার্থী শুভেন্দু এখন বিজেপির প্রার্থী। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তৃণমূলের প্রার্থী। নন্দীগ্রামের শক্ত মাটিতে মীনাক্ষী পারবেন ছাপ ফেলতে?
সবমিলিয়ে সিপিএমের মিশন মেদিনীপুর সাকসেসফুল হয় কিনা তার জন্য অপেক্ষা ২ মে’র।
Comments are closed.