প্রচণ্ড শক্তি বাড়াচ্ছে ঘূর্ণিঝড় আমফান, বুধবার রাতে আছড়ে পড়তে পারে বাংলায়, আয়লার থেকেও হতে পারে ভয়ঙ্কর
শক্তি বাড়াচ্ছে ঘূর্ণিঝড় ‘আমফান’, ঝুঁকির মুখে বাংলা। মৌসম ভবনের পূর্বভাস, সোমবার প্রবল শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ের (এক্সট্রিমলি সিভিয়ার সাইক্লোন) চেহারা নিতে পারে আমফান। আর ২০ মে রাত ৯ টা থেকে ১২ টার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের দিঘা এবং বাংলাদেশের হাতিয়ার মাঝখান দিয়ে স্থলভূমিতে আছড়ে পড়তে পারে এই ঘূর্ণিঝড়।
আগামী কয়েক দিনে আন্দামানের বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়বে এই ঘূর্ণিঝড়। প্রভাব পড়বে ওড়িশা উপকূলের জেলাগুলিতেও। ২০০৯ সালের আয়লা ঘূর্ণিঝড়ের থেকেও বেশি শক্তিশালী বলা হচ্ছে আমফানকে।
আবহাওয়া অফিস জানাচ্ছে, মঙ্গলবার থেকেই আবহাওয়া খারাপ হতে শুরু করবে। আর বুধবার গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের প্রায় সর্বত্র বৃষ্টি হবে। কোনও কোনও এলাকায় ভারী বৃষ্টি, কোথাও কোথাও অতিভারী বৃষ্টি হতে পারে। উপকূলীয় জেলাগুলিতে বৃষ্টি শুরু হবে মঙ্গলবার থেকে। ঝোড়ো হাওয়া বইবে উপকূল লাগোয়া অঞ্চলে। বুধবার থেকে দক্ষিণবঙ্গের সব জেলাতেই ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির আশঙ্কা থাকছে। কলকাতা, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি, পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় ২০০ মিলিমিটারেরও বেশি বৃষ্টি হতে পারে। উপকূলীয় অংশে ঝড়ের সর্বোচ্চ গতিবেগ পৌঁছতে পারে ঘণ্টায় ১৫৫ কিলোমিটারে। দুই ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর ইত্যাদি জেলায় এই ঝড়ের গতিবেগ থাকবে ঘণ্টায় ১০০ থেকে ১২০ কিলোমিটার। তাছাড়া কলকাতা, হাওড়া, হুগলি জেলায় ঘণ্টায় ৭০ থেকে ৮০ কিলোমিটার বেগে দমকা বাতাস বইতে পারে। বৃহস্পতিবার দার্জিলিং, কালিম্পং, জলপাইগুড়ি, কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ারেও ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে জানাচ্ছে আবহাওয়া দফতর।
আবহাওয়া বিজ্ঞানীদের মতে, সমুদ্রে জলতলের উষ্ণতা ২৬.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি হলেই তা ঘূর্ণিঝড় তৈরিতে সাহায্য করে। বঙ্গোপসাগরের জলের উষ্ণতা তার থেকে বেশ কিছুটা বেশি হওয়ায় আমফানের শক্তি দ্রুত বেড়েছে। তার ফলে অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় হিসেবে সে স্থলভূমিতে প্রবেশ করতে পারে আমফান। মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে।
প্রশাসন সূত্রের খবর, বিপর্যয় মোকাবিলার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। উপকূলরক্ষী বাহিনীও প্রস্তুত। জলপথ ও আকাশপথে নজরদারি চলছে। মাইকে প্রচার চলছে দিঘা, রামনগর, মন্দারমণি-সহ উপকূলবর্তী এলাকায়। ৪৩ টি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র, ৩০ টি বন্যাত্রাণ কেন্দ্র এবং প্রতিটি কেন্দ্রের কাছাকাছি তিনটি স্কুলবাড়ি প্রস্তুত রাখা হয়েছে। জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দলের (এনডিআরএফ) সদস্যরা দিঘায় পৌঁছেছেন। অসামরিক প্রতিরক্ষার দলও থাকছে দিঘা ও হলদিয়ায়।
Comments are closed.