আপনি কি দিল্লিতে থাকেন? জলের লাইন বা বিদ্যুতের কানেকশনের জন্য আবেদন করতে চাইছেন? বা ড্রাইভিং লাইসেন্স, রেশনকার্ডে কোনও সংশোধন করতে চাইছেন? কিংবা ম্যারেজ সার্টিফিকেটের জন্য আবেদন করবেন ভাবছেন? কিন্তু সরকারি দফতরে সেই দীর্ঘ লাইন আর টালবাহানার কারণে ভাবছেন, এগুলো করতে আবার কত ঝক্কি পোহাতে হবে! তাহলে আপনার জন্য সুখবর। আপনি যদি দিল্লির বাসিন্দা হন, তাহলে একটি নির্দিষ্ট নম্বরে ফোন করে আপনার প্রয়োজন জানালেই, আধিকারিকরা এসে আপনার থেকে প্রয়োজনীয় নথি সংগ্রহ করে নিয়ে যাবেন। কয়েকদিন পর আপনি বাড়িতে বসেই পেয়ে যাবেন আপনার প্রয়োজনীয় সরকারি নথি বা নতুন পরিচয় পত্র।
সোমবার দিল্লিতে সরকারি নথির হোম ডেলিভারি পরিষেবা চালু করল অরবিন্দ কেজরিওয়াল সরকার। দিল্লির ১১ টি জেলাতেই মিলবে এই পরিষেবা। যার পোশাকি নাম ডোরস্টেপ ডেলিভারি পরিষেবা। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল জানিয়েছেন, এবার থেকে শুধু পিজ্জা নয়, কাস্ট সার্টিফিকেট, ইনকাম সার্টিফিকেট, ড্রাইভিং লাইসেন্স, রেশন কার্ড, জলের লাইনের আবেদন, বিয়ের সার্টিফিকেট, পাসপোর্ট সহায়তাসহ ৪০ টি সরকারি নথির আবেদন বাড়িতে বসেই করতে পারবেন দিল্লিবাসী। ছুটতে হবে না সরকারি দফতরগুলিতে। এর জন্য একটি বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে চুক্তি করেছে দিল্লি সরকার। জানা গেছে, ১০৭৬ এই নম্বরে ফোন করে কী নথি বানাতে চাইছেন বা সেই সংক্রান্ত কী সহায়তা চাইছেন তা জানালেই, ফোনের ওপার থেকে আপনাকে সেটির জন্য কী ধরনের নথি লাগবে তা জানিয়ে দেওয়া হবে। পরে নির্দিষ্ট দিনে একজন মোবাইল সহায়ক আপনার বাড়িতে গিয়ে সেই সব নথি মিলিয়ে সংগ্রহ করে নিয়ে যাবেন। নথি বা সংশ্লিষ্ট পরিচয়পত্রটি তৈরি হয়ে গেলে আপনি তা আবার বাড়িতে বসেই পেয়ে যাবেন। এর জন্য আপাতত প্রতি জেলায় ৫ জন মোবাইল সহায়ক নিয়োগ করা হয়েছে, যা ২৫ হাজারে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা আছে সরকারের।
জানা গেছে, ১০ সেপ্টেম্বর থেকেই এই হোম ডেলিভারির সুবিধা পাবেন দিল্লিবাসী। সরকারের দাবি, দেশে এই পরিষেবা এই প্রথম, যেখানে ঘরে বসেই সরকারি নথির আবেদন, নথি জমা ও পরিচয়পত্র বা সরকারি নথি ঘরে বসেই পাওয়া যাবে। আগেই এই পরিষেবা শুরু করার পরিকল্পনা ছিল দিল্লি সরকারের। কিন্তু দিল্লির ক্ষমতা কার হাতে থাকবে, তা নিয়ে রাজ্যপালের বিবাদের জেরে তা পিছিয়ে যায়। সুপ্রিম কোর্টের রায় এবিষয়ে দিল্লি সরকারের পক্ষে যাওয়ায় এবার তার সূচনা হল।
যদিও কংগ্রেসের তরফে আপ সরকারের এই পরিষেবার সমালোচনা করে বলা হয়েছে, এখন যেখানে অনলাইনেই এই আবেদন করা যায়, সেখানে এই পরিষেবার বিশেষ প্রয়োজনীয়তা নেই। ২০১৯ লোকসভা ভোটের আগে মানুষের মন জিততেই এটা করা হল। পাশাপাশি এ বিষয়ে বেসরকারি সংস্থা নিয়োগ হওয়ায় তথ্যের নিরাপত্তা কতটা থাকবে তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে কংগ্রেস।
Comments