ফের কেন্দ্রের সমালোচনায় রঘুরাম রাজন, পাশাপাশি কৃষি ঋণ মকুবের প্রতিশ্রুতি বন্ধে নির্বাচন কমিশনকে দিলেন চিঠি

ফের কেন্দ্রের সমালোচনায় রিজার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন গভর্নর রঘুরাম রাজন। দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে শুক্রবার রাজন বলেন, দেশে বেকারদের সুরাহা তেমন হয়নি। সরকার নতুন চাকরি ক্ষেত্র তৈরি করতে ব্যর্থ। আর যার কারণে ভারতীয় রেলে ৯০ হাজার শূন্য পদে আড়াই কোটি প্রার্থী আবেদন করেন। রাজনের মতে, মানুষ বাধ্য হয়ে ‘লো লেভেল’ কাজে যুক্ত হচ্ছেন। তা থেকেই বোঝা যাচ্ছে, দেশে কর্মসংস্থান তৈরি হচ্ছে না।
এর পাশাপাশি, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ইস্যুতেও মুখ খোলেন রাজন। বলেন, প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব স্বাধীন ক্ষমতা এবং এক্তিয়ার থাকা উচিত। প্রসঙ্গত, সম্প্রতি কেন্দ্রের সঙ্গে সংঘাতের জেরে ইস্তফা দিয়েছেন আরবিআই-এর গভর্নর উর্জিত প্যাটেল। তাঁর ইস্তফার দিনও রাজন বলেছিলেন, গোটা বিষয়টিতে দেশের মানুষের উদ্বিগ্ন হওয়া উচিত।
শুক্রবার দিল্লিতে অর্থনীতিবিদদের এক বৈঠকে এই মন্তব্য করেন রঘুরাম রাজন। তবে এদিন তাঁর যে বক্তব্য নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে তা হল, কৃষি ঋণ মকুব নিয়ে রাজনৈতিক দগুলির প্রাক-নির্বাচনী ঘোষণার কার্যত সমালোচনা শোনা গেছে তাঁর মুখে।
ক্ষমতায় এলে ১০ দিনের মধ্যে কৃষি ঋণ মকুব করা হবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন রাহুল গান্ধী। আর মধ্য প্রদেশ, রাজস্থান এবং ছত্তিশগড়ে কংগ্রেসের জয়ের ৩ দিন বাদেই রাজন বললেন, রাজনৈতিক দলগুলি নির্বাচনের আগে কৃষি ঋণ মকুবের যে প্রতিশ্রুতি দেয়, তার বিরোধিতা করে তিনি দেশের নির্বাচন কমিশনকে চিঠি লিখেছেন।
রাজন বলেন, দেশের কৃষকরা প্রচুর সমস্যার মধ্যে আছেন, তাঁদের যুক্তিসঙ্গত ক্ষোভও আছে। সেই ক্ষোভ নিরসনে এবং কৃষক স্বার্থ রক্ষার্থে সরকারের অবশ্যই পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। কিন্তু কৃষি ঋণ মকুব করা সমাধান নয়। কারণ, সব কৃষক ঋণ নিতে পারেন না। স্বচ্ছল কৃষকই ঋণ নিতে পারেন, তাই ঋণ মকুব করে সবার সুরাহা করা যায় না। তাছাড়া, কৃষি ঋণ মকুব দেশের ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থাকে ক্ষতিগ্রস্থ করে। তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলি কৃষি ঋণ মকুবের ঘোষণা করে, এটা সাংঘাতিক প্রবণতা। শুধু ঋণ মকুব করলেই কৃষকের স্বার্থ রক্ষিত হবে কিনা সেই প্রশ্ন অত্যন্ত জটিল বলেও মন্তব্য করেন রাজন। তবে রাজনৈতিক দলগুলির এই কৃষি ঋণ মকুবের ঘোষণা বন্ধে নির্বাচন কমিশনকে তাঁর চিঠি লেখা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
রঘুরাম রাজন যখন কৃষি ঋণ মকুবের ঘোষণা নিয়ে ঘুরিয়ে রাহুল গান্ধীর সমালোচনা করলেন, তখন মধ্য প্রদেশের বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহান কংগ্রেসকে মনে করিয়ে দিয়েছেন, ১০ দিনের মধ্যে কৃষক ঋণ মুকুবের প্রতিশ্রুতির কথা।

Comments are closed.