জেএনইউ হামলার পর এক মাস কেটে গিয়েছে। কিন্তু আজ পর্যন্ত একজন হামলাকারীকেও ধরতে পারেনি দিল্লি পুলিশ। গত ৫ জানুয়ারি মুখঢাকা কিছু দুষ্কৃতী জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ঢুকে পড়ুয়াদের উপর হামলা চালায়। গুরুতর আহত হন ছাত্র সংসদের নেত্রী ঐশী ঘোষ-সহ ত্রিশ জনের বেশি শিক্ষক ও পড়ুয়া। অভিযোগের আঙুল ওঠে বিজেপির ছাত্র সংগঠন এবিভিপি আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। হামলার পর দিল্লি পুলিশের বিশেষ তদন্তকারী দলের তদন্ত কত দূর এগিয়েছে, কেউ জানে না।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফেও এই ঘটনার প্রেক্ষিতে যে প্যানেল গঠন করা হয়, তার কার্যকারিতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। হামলার পর চার সপ্তাহ কেটে গেলেও এখনও কোনও জখম পড়ুয়া ও প্রত্যক্ষ্যদর্শীকে বিশ্ববিদ্যালয় গঠিত প্যানেলের পক্ষ থেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়নি বলে সূত্রের খবর।
গত ৫ জানুয়ারি পড়ুয়াদের উপর লাঠি, লোহার রড নিয়ে হামলার সময় থেকেই দিল্লি পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে, তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটে অপেক্ষা করছিল। এদিকে জেএনইউ-র উপাচার্য ও দিল্লি পুলিশের মধ্যে হোয়াটসঅ্যাপ কথোপকথন থেকে জানা গিয়েছিল, গন্ডগোলের আশঙ্কা সম্পর্কে পুলিশকে অবহিত করলেও ক্যাম্পাসে ঢোকার বদলে তাদের গেটের বাইরে অপেক্ষা করতে বলেছিলেন তিনি।
চার সপ্তাহের মধ্যে কতটা এগিয়েছে তদন্তের গতি? বিভিন্ন সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, দিল্লি পুলিশ যে সিট গঠন করে, তারা ঐশী-সহ জেএনইউ-র আক্রান্ত পড়ুয়াদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। কিন্তু মুখঢাকা এক দুষ্কৃতী যে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া তথা এবিভিপি-র কর্মী বলে জানা গিয়েছিল, তাকে এখনও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়নি।
জওহরলাল নেহরু ইউনিভার্সিটি স্টুডেন্টস ইউনিয়নের (জেএনইউএসইউ) অভিযোগ, বামেদের একাধিকবার জিজ্ঞাসাবাদ করা হলেও হামলাকারীদের একজনকেও এখনও ধরেনি পুলিশ। জেএনইউএসইউ-র সাধারণ সম্পাদক সতীশ যাদবের কথায়, ভাবতে অবাক লাগে, কতগুলো রাজ্য ঘুরে রাষ্ট্রবিরোধী স্লোগান দেওয়ার অভিযোগে শরজিল ইমামকে ধরে ফেলতে পারে পুলিশ, কিন্তু বাইরে থেকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ঢুকে পড়ুয়াদের মারধর করে চলে যাওয়া অপরাধীদের ধরতে অপরাগ দিল্লি পুলিশ! তাঁর আরও অভিযোগ, ডিইউ-র ছাত্রী তথা এবিভিপি সদস্যাকে আক্রান্ত পড়ুয়ারা এবং সংবাদমাধ্যম চিহ্নিত করার পরেও তাকে জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন বোধ করেনি দিল্লি পুলিশ।
দিল্লি পুলিশের এক শীর্ষ কর্তা অবশ্য দাবি করেছেন, তদন্তের প্রয়োজনে তাঁরা শীঘ্রই কথা বলবেন সেই তরুণীর সঙ্গে। কিন্তু মোবাইল বন্ধ থাকার জন্য অভিযুক্তার সঙ্গে যোগাযোগ সম্ভব হয়নি বলে দাবি নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই পুলিশ অফিসারের। তা হলে একমাস ধরে কী হল? পুলিশ জানাচ্ছে, প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান ও বিভিন্ন মোবাইল ফোন থেকে ঘটনার ছবি, ভিডিয়ো সংগ্রহ করে সেগুলি সেন্ট্রাল ফরেনসিক সায়েন্স ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হয়েছে।
Comments are closed.