তিনি ছিলেন ঝাড়গ্রামের দু’বারের বিধায়ক, বিধানসভা ডেপুটি স্পিকারও বটে। সেই সুকুমার হাঁসদার শেষকৃত্য সম্পন্ন করা নিয়ে শুক্রবার তীব্র উত্তেজনা ছড়াল ঝাড়্গ্রামের দুবরাজপুরে। এমনকী সুকুমারবাবুর মরদেহ কয়েকঘণ্টা ধরে চিতায় শোয়ানো থাকে। বিক্ষোভকারীদের কেউ কেউ আবার চিতার কাঠ টেনে ফেলে দেন বলেও অভিযোগ। পরে বিক্ষোভকারীদের দাবি মেনে সুকুমার হাঁসদার দেহ যেখানে সৎকার করা হয়, সেই স্থানের তিন কাঠা জমি সুকুমারবাবুর পুত্র শ্মশান করার প্রতিশ্রুতি দিলে বিকেলে শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। কিন্তু কী কারণে বিক্ষোভ?
গত বুধবার কলকাতায় মৃত্যু হয় সুকুমার হাঁসদার। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঝাড়গ্রাম শহরের রঘুনাথপুরের বাড়িতে বিধায়কের মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয়। সুকুমারবাবুর ছেলে সুরজিৎ হাঁসদার অনুরোধে শুক্রবার সকালে দুবরাজপুর থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে জারালাটা গ্রামে সৎকারের ব্যবস্থা করে প্রশাসন। জারালাটা এলাকার ক্যানেল পাড়ের কাছে সুকুমারবাবুর নিজেরই পতিত জমি আছে। সেই জমি পরিষ্কার করা হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন জেলাশাসক, পুলিশ সুপার প্রমুখ। বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ জারলাটায় সুকুমারবাবুর মৃতদেহ নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ছিলেন রাজ্যের জলসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র, রাজ্যসভার সদস্য মানস ভুঁইয়ারা। তার মধ্যেই জারালাটা গ্রামের বাসিন্দারা সুকুমারবাবুর দাহকাজে বাধা দেন। তাঁদের দাবি, গ্রামের যেখানে সেখানে দাহ করা যাবে না। তাঁদের এও প্রশ্ন, দুবরাজপুরে দাহ না করে কেন জারালাটায় মৃতদেহ আনা হল? বিক্ষোভকারীরা শর্ত দেন ওই জায়গায় দাহ করতে হলে জায়গাটিকে ‘শ্মশান’ বলে ঘোষণা করতে হবে। এরপর ঝাড়গ্রামের আইসি, বিডিও, এসডিপিও গ্রামবাসীদের সঙ্গে দফায় দফায় আলোচনার করে দুপুর ২টো নাগাদ গান স্যালুট দিয়ে ডেপুটি স্পিকারের মরদেহ চিতায় তোলা হয়, তখন ফের শুরু হয় গণ্ডগোল। বিক্ষোভকারীরা জানিয়ে দেন, সৎকার করতে দেওয়া হবে না! প্রায় দেড় ঘণ্টা চিতায় মৃতদেহ পড়ে থাকার পর গ্রামবাসীদের দাবিমতো শ্মশান করার জন্য তিনকাঠা জমি দিতে রাজি হন সুকুমার হাঁসদার পুত্র সুরজিৎ। তারপর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়।
সাংসদ মানস ভুঁইয়া বলেন, আদিবাসী সমাজকে অসম্মানের উদ্দেশ্য আমাদের নেই। তাই গ্রামবাসীদের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
Comments are closed.