বিতর্কিত মন্তব্য করায় তাঁর জুড়ি মেলা ভার। যতই সমালোচনা হোক, কুরুচিপূর্ণ ও বেলাগাম শব্দ প্রয়োগে রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ পিছপা হন না বলেই অভিযোগ করেন বিরোধীরা। এবার এক কলেজ ছাত্রীর সম্পর্কে অশালীন মন্তব্য করলেন তিনি। যে মন্তব্যের বিরুদ্ধে পাটুলি থানায় দিলীপ ঘোষের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছেন ছাত্রীটি।
ঘটনার সূত্রপাত শুক্রবার দুপুরের পর। এদিন গড়িয়ার পাটুলি মোড় থেকে সিএএ’র সমর্থনে একটি মিছিল করে বিজেপি। মিছিলের যাওয়ার কথা ছিল বাঘাযতীন পর্যন্ত। সেখানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ। নির্ধারিত সময়ের কিছু পর মিছিল শুরু হলেও তা কিছুক্ষণ পরেই আটকে দেয় পুলিশ। বাঘাযতীন পর্যন্ত মিছিল যেতে দেওয়া হয়নি।
মিছিলের পাশে ফুটপাথে দাঁড়িয়ে এদিন সিএএ, এনআরসি, এনপিআর এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছিলেন সংস্কৃত কলেজের স্নাতক স্তরের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী সুদেষ্ণা দত্তগুপ্ত। তাঁর হাতে একটি প্ল্যাকার্ড লেখা ছিল, ‘নো এনআরসি, নো সিএএ, নো এনপিআর’, ‘দিলীপ ঘোষ গো ব্যাক।’ মিছিল থেকে কয়েকজন বিজেপি কর্মী বেরিয়ে এসে ওই ছাত্রীর হাত থেকে প্ল্যাকার্ড কেড়ে ছিঁড়ে ফেলে। তাঁকে পুলিশের সামনেই হেনস্থা করা হয় বলে অভিযোগ। সেও কাজকেই সমর্থন করে পরে সেখানেই দিলীপ বলেন, ওর চোদ্দ পুরুষের ভাগ্য যে, শুধু পোস্টার কেড়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। আর কিছু করা হয়নি। আমাদের কর্মীদের সামনে আসে কেন? অনেক সহ্য করা হয়েছে। আর নয়। পাটুলির বাসিন্দা ওই ছাত্রী ওই সময় ফেসবুক লাইভ করছিলেন। বিভিন্ন সংবাদমাদ্যমের ক্যামেরায় ধরা পড়েছে সেই দৃশ্য। এই ঘটনার পরে ক্ষোভে ফেটে পড়েন তিনি। ছাত্রীটি জানান, মত প্রকাশ করা এবং কথা বলা কারও মৌলিক অধিকারের মধ্যে পড়ে। তা খর্ব করছে বিজেপি কর্মীরা। তাঁর অভিযোগ, তাঁকে হেনস্থা করা হয়েছে। ঘটনাটি তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্টও করেন।
দিলীপের মন্তব্যের সমালোচনা করেন সব রাজনৈতিক দলের নেতারা। রাজ্যের পরিষদীয় প্রতিমন্ত্রী তাপস রায় বলেন, একজন ছাত্রীর গণতান্ত্রিক প্রতিবাদ পর্যন্ত সহ্য করার ক্ষমতা নেই বিজেপি নেতার! দিলীপবাবু যে মহিলাদের সম্মান করতে জানেন না, তা মানুষ দেখুক। কংগ্রেস নেতা শুভঙ্কর সরকার বলেন, এরা ক্ষমতায় এলে মহিলাদের নিরাপত্তার হাল কী হবে, কে জানে। বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, সাধে কি জ্যোতিবাবু এই দলটাকে অসভ্য, বর্বর বলেছিলেন?
Comments are closed.