এয়ার ইন্ডিয়া, রেল সব বিক্রি করে দেবে, দেশের মানুষের জন্য শুধু জেল থাকবে। এনআরসি, সিএএ এবং রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার বেসরকারিকরণের তীব্র বিরোধিতা করে এই ভাষাতেই মোদী সরকারের সমালোচনা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি।
বুধবার নদিয়ার কৃষ্ণগঞ্জ গভর্নমেন্ট কলেজের মাঠের সভায় মমতা বলেন, ভিন দেশে এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান দেখে গর্ব অনুভব হত। এখন সেই রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাকে বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছে মোদী সরকার। রেলের ভাড়া বৃদ্ধির পরও আরশোলা, টিকটিকির দাপটে যাত্রীরা ত্রস্ত, তা নিয়ে অভিযোগ করলে গোঁসা হয় কেন্দ্রের। রেল থেকে রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিকম সংস্থা, সব কিছু বিক্রি করে এখন নাগরিকের সার্টিফিকেট দেখতে ব্যস্ত মোদী সরকার। মমতার কটাক্ষ, দেশের সব বিক্রি করে মানুষের জন্য কেবল জেলখানা রাখবে কেন্দ্র। জনতার উদ্দেশে তিনি বলেন, বিজেপিকে জিজ্ঞেস করুন, ব্যাঙ্ক থেকে বিমা, আপনার নিরাপত্তা কোথায় আছে?
সিএএ, এনপিআর, এনআরসি-র বিরোধিতা করে মমতা বলেন, কেউ আপনার সার্টিফিকেট চাইলে আগে তাঁর বাবার জন্মস্থানের সার্টিফিকেট চাইবেন। পিআইবি-র একটি বিবৃতি হাতে নিয়ে মমতা দাবি করেন, ২০১৪ সালে ২৬ নভেম্বর মোদী সরকার জানিয়েছিল, এনআরসি-র প্রথম ধাপই হল এনপিআর। এখন আবার লোকসভায় দাবি করা হচ্ছে, দেশজুড়ে এনআরসি হচ্ছে না। মানুষকে সতর্ক করে তিনি জানান, এ রাজ্যে কোনও সরকারি কর্মী যদি এনপিআর নিয়ে কোনও তথ্য জানতে চান, কেউ যেন তা না দেন। বিজেপি, সিপিএম প্রভাবিত কিছু সরকারি কর্মচারী চাপে পড়ে এ কাজ করতে পারে। কিন্তু ভুলেও যেন তাঁদের হাতে কেউ তথ্য তুলে না দেন। একমাত্র তিনি নিজে যদি এ বিষয়ে পরবর্তী সময়ে কিছু ঘোষণা করেন তাতে যেন আস্থা রাখেন মানুষ। মঙ্গলবারও তিনি রানাঘাট এবং বনগাঁর সভায় একই মন্তব্য করেছিলেন। তাঁর আরও অভিযোগ, কিছু এনজিও এই সময়ে রাজ্যে ঢুকে মানুষকে সুবিধা দেওয়ার নাম করে ‘ঘুঘুর বাসা’ তৈরি করছে।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আগে কেন্দ্র থেকে কোনও বিল এলে তার জন্য ৭২ ঘণ্টা সময় পেত রাজ্য। এখন সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে যাই খুশি তাই দিয়ে বিল করে রাতারাতি রাজ্যগুলিকে জানানো হচ্ছে, পরের দিনই সংসদে আলোচনা আছে। এটা কোনও সরকার? পাশাপাশি কৃষ্ণনগরের সাংসদ মহুয়া মৈত্রের উপস্থিতিতে এনআরসি, সিএএ, এনপিআর নিয়ে সংসদে তাঁদের ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করেন মুখমন্ত্রী।
বিজেপিকে ‘পচা শামুক’ বলে কটাক্ষ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, কেন্দ্রের হাতে বেকারদের জন্য চাকরি নেই। অস্ত্র কিনে, টাকা ছড়িয়ে, দাঙ্গা লাগিয়ে এরা বাংলার দখল নিতে চাইছে।
Comments are closed.