ডিভিসির একাধিক জলাধার থেকে রেকর্ড পরিমাণ জল ছাড়ার ফলে বন্যা পরিস্থিতি দক্ষিণবঙ্গজুড়ে। সোমবার থেকেই আশঙ্কা করা হচ্ছিল, শক্তিশালী নিম্নচাপের কারণে ঝাড়খণ্ডে যে পরিমাণে বৃষ্টি হয়েছে, তাতে জল ছাড়ার পরিমাণ বাড়বে। মঙ্গলবার ডিভিসির মাইথন ও পাঞ্চেত বাঁধ থেকে বিপুল পরিমাণে জল ছাড়ার ফলে দক্ষিণবঙ্গের ১০টি জেলার বিস্তীর্ণ অংশ বন্যার কবলে পড়েছে। কয়েকদিনের টানা বৃষ্টির ফলে নদী-নালা-খাল-বিল এমনিতেই ভরে ছিল। তার সঙ্গে ডিভিসির ছাড়া জল যুক্ত হওয়ায় পরিস্থিতি উদ্বেগজনক হয়ে উঠেছে।
সোমবার রাতে মাইথন ও পাঞ্চেত বাঁধ মিলিয়ে মোট ৮০ হাজার কিউসেক হারে জল ছাড়া হচ্ছিল। মঙ্গলবার সকালে তা বেড়ে হয় আড়াই লক্ষ কিউসেক। সেই জল আসে দুর্গাপুর ব্যারেজে। ফলে সেখান থেকে রাতে ২ লক্ষ ৭৪ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়। রাতে অবশ্য মাইথন-পাঞ্চেত থেকে জল ছাড়ার পরিমাণ কিছুটা কমিয়ে ২ লক্ষ ২০ হাজার কিউসেক করা হয়। সূত্রের খবর, ২০০৯ সালের পর কখনও এত বেশি হারে জল ডিভিসি ছাড়েনি।
সেচ দফতরের অভিযোগ, রাজ্য সরকারকে আগাম না জানিয়ে ডিভিসি প্রচুর জল ছেড়ে দেওয়ায় বানভাসি হয়েছে বহু এলাকা। ঝাড়খণ্ডে সুর্বণরেখার গালুডি বাঁধ থেকে ২ লক্ষ ৫৭ হাজার কিউসেক হারে জল ছাড়া হচ্ছে। মাইথন-পাঞ্চেতের ছাড়া জল বাঁকুড়া, পূর্ব বর্ধমান, হুগলি, হাওড়া জেলার বিস্তীর্ণ অংশ প্লাবিত করেছে। গালুডির ছাড়া জলে বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে ঝাড়গ্রাম ও পশ্চিম মেদিনীপুর। বাঁকুড়ার মুকুটমণিপুরে কংসাবতীর বাঁধ থেকে ৪০ হাজার কিউসেক হারে জল ছাড়া হচ্ছে। বন্যা পরিস্থিতির মধ্যে মঙ্গলবার আরও দু’জন মারা গিয়েছে বলে সরকারিভাবে জানানো হয়েছে। পূর্ব বর্ধমানে দেওয়াল চাপা পড়ে একজন ও হুগলিতে বিদ্যুতস্পৃষ্ট হয়ে একজন মারা গিয়েছেন। চলতি বন্যা পরিস্থিতিতে মোট চারজন মারা গেলেন। বীরভূমে আরও একজন বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গিয়েছেন বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। প্রচুর কৃষিজমি জলের তলায় চলে যাওয়ার পাশাপাশি বহু মাটির বাড়ি ভেঙে গিয়েছে। অজস্র রাস্তা, সেতু জলমগ্ন।
Comments are closed.