গুজরাত, মহারাষ্ট্র, ত্রিপুরা সহ ১১ টি রাজ্য কেন্দ্রের বিনামূল্যের রেশনের ১ শতাংশেরও কম বিলি করেছে গরিব মানুষের মধ্যে!
অতিমারি পরিস্থিতিতে নভেম্বর মাস পর্যন্ত দেশের ৮০ কোটি মানুষকে বিনামূল্যে খাদ্যশস্য দেওয়ার কথা ঘোষণা করছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এতে কেন্দ্রের খরচ হবে প্রায় ৯০ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু বাস্তবে সরকারের এই বিনামূল্যে রেশন প্রকল্প কতটা কার্যকর হচ্ছে? কেন্দ্রের তথ্যই বলছে, ১১ টি রাজ্য বরাদ্দকৃত খাদ্যশস্যের এক শতাংশেরও কম বিতরণ করেছে। গোয়া এবং তেলেঙ্গানার মতো রাজ্য আবার এই পরিসংখ্যান একেবারে শূন্য! তাছাড়া, অন্ধ্রপ্রদেশ, গোয়া, মোদীর রাজ্য গুজরাত, ঝাড়খণ্ড, লাদাখ, মহারাষ্ট্র, মেঘালয়, ওড়িশা, সিকিম, তামিলনাড়ু, তেলেঙ্গানা এবং ত্রিপুরার মতো রাজ্যগুলি তোলা রেশনের এক শতাংশেরও কম দরিদ্রদের মধ্যে বণ্টন করেছে। খোদ কেন্দ্রীয় উপভোক্তা বিষয়ক, খাদ্য ও গণবন্টন মন্ত্রকই এমন তথ্য দিয়েছে।
কেন্দ্রের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রক জানাচ্ছে, গত এপ্রিল ও মে মাসে গোয়া এবং তেলঙ্গানা বিনামূল্যে কোনও শস্য বিতরণ করেনি। এছাড়া বিহার, গুজরাত, মহারাষ্ট্র, তামিলনাড়ু, সিকিম এবং লাদাখের মতো ছয়টি রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলও জুন মাসে ফ্রি রেশনে এক শতাংশ শস্যও বণ্টন করেনি।
যদিও কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সিতারমন ঘোষণা করেছিলেন, সংশ্লিষ্ট প্রকল্পটি শুধু আট কোটি মানুষের উপকারে আসবে যাঁদের রেশন কার্ডই নেই। কিন্তু তথ্য বলছে, যাদের লক্ষ্য করে এই প্রকল্প, তাদের এক-চতুর্থাংশের মধ্যে বিনামূল্যে খাদ্যশস্য বিতরণ করা হয়েছে। এক ডিজিটাল প্রেস কনফারেন্সে খাদ্য সচিব সুধাংশু পান্ডে জানিয়েছেন, এ পর্যন্ত সারা দেশে ২.১৪ কোটি অভিবাসী শ্রমিক বিনামূল্যে খাদ্যশস্য পেয়েছেন। তিনি জানান, গোয়া ও তেলঙ্গানা-সহ ছয় বা সাতটি রাজ্য কেন্দ্রকে জানিয়েছে যেহেতু অভিবাসী শ্রমিকরা তাঁদের রাজ্য থেকে এখনও দূরে রয়েছেন, তাই এই প্রকল্পের বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি।
এদিকে রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলি বরাদ্দকৃত ৮ লক্ষ টন খাদ্যশস্যের ৮০ শতাংশ ইতিমধ্যেই তুলে নিয়েছে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলি এপ্রিল এবং মে, এই দু’ মাসে মাত্র ১.০৭ লক্ষ টন খাদ্যশস্য বিতরণ করতে পেরেছে। দেশের দরিদ্র মানুষ যখন অতিমারি পরিস্থিতিতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন, রুজি রোজগার হারিয়েছেন লক্ষ লক্ষ শ্রমিক, তখন কেন্দ্রের বিনামূল্যে রেশন প্রকল্প বাস্তবে কতটা ফলপ্রসূ হয়েছে সেই প্রশ্ন উসকে দিয়েছে খোদ সরকারি দফতরই।
Comments are closed.