মঙ্গলবার বিজেপি ১৩ টি আসনের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেছে। এদের মধ্যে রয়েছেন বালুরঘাটের বিজেপি প্রার্থী অশোক লাহিড়ী। প্রথমে তাঁকে আলিপুরদুয়ার থেকে প্রার্থী করা হয়েছিল। কিন্তু জানা যায় তিনি এখন আর বাংলার ভোটার নন। তাই সে যাত্রায় নাম বদলাতে হয় বিজেপিকে। এবার অশোকবাবুকে দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট থেকে প্রার্থী করল বিজেপি। ২০০২ থেকে ২০০৭ পর্যন্ত অটলবিহারী বাজপেয়ী ও মনমোহন সিংহ সরকারের অর্থনৈতিক উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করেছেন অশোক লাহিড়ী।
বাংলার ভোটার হওয়ার পর আলিপুরদুয়ারের বদলে অশোক লাহিড়ীকে বালুরঘাট থেকে প্রার্থী করল বিজেপি। আলিপুরদুয়ারে লড়বেন সুমন কাঞ্জিলাল। বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, অশোক লাহিড়ীর সমর্থনে তাঁর বায়োডাটাও বিতরণ করা হয়েছিল। এই বিষয়ে আলিপুরদুয়ারের বিজেপি সভাপতি গঙ্গা প্রসাদ শর্মা জানিয়েছেন, আমরা এই প্রার্থীদের সম্পর্কে পুরোপুরি অন্ধকারে ছিলাম। তাঁদের বাছাই করার আগে দলের জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে যোগযোগ করা উচিত ছিল। এরপরেই দল ছাড়েন শর্মা।
একদা আলিপুরদুয়ার ছিল বামেদের শক্ত ঘাঁটি। আরএসপি প্রার্থী জিততেন সেখানে। কিন্তু খেলা বদলে যায় ২০১১ সালে। জেতেন তৃণমূল সমর্থিত কংগ্রেসের বর্ষীয়ান নেতা দেবপ্রসাদ রায়। ২০১৬ সালে এই আসনে জয়লাভ করেন তৃণমূলের সৌরভ চক্রবর্তী। ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটে বিজেপি প্রায় ২১ হাজার ভোট পেয়েছিল বিজেপি। যা মোট ভোটের ১০ শতাংশ। কিন্তু গত লোকসভায় আবার পরিস্থিতির বদল হয়। অনেক ভোটে এগিয়ে যায় বিজেপি। সেই আসন থেকেই অশোক বাবুকে প্রার্থী করতে চেয়েছিল গেরুয়া শিবির। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাঁকে বালুরঘাট থেকে প্রার্থী করল দল। ঘটনাচক্রে বালুরঘাট আসনটিও একসময় ছিল আরএসপির দখলে।
এই আসনের ৮ বার বিধায়ক হয়েছেন আরএসপির বিশ্বনাথ চৌধুরী। ২০১১ সালে তৃণমূল আসনটি জিতেছিল। ২০১৬ সালে ফের আসন পুনরুদ্ধার করেছিলেন বিশ্বনাথ চৌধুরী।
অর্থনীতিবিদ হিসেবে প্রেসিডেন্সির প্রাক্তনী অশোক লাহিড়ীর দুনিয়াজোড়া খ্যাতি। আইএমএফ, বিশ্বব্যাঙ্ক সব জায়গাতেই গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব সামলেছেন অশোক লাহিড়ী। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ব্যাপার হল, অশোক লাহিড়ী সেই বিরল অর্থনীতিবিদ, যিনি সরকার বদলে গেলেও পদ হারাননি। বরং বাজপেয়ী সরকারের পর স্বচ্ছন্দে মনমোহন সরকারের কাজও সাফল্যের সঙ্গে শেষ করেছিলেন। বামপন্থীদের ঘোর সমালোচক অশোক লাহিড়ী নীতিগত ভাবে একাধিকবার মমতা সরকারের প্রশংসাও করেছেন।
অর্থ মন্ত্রকের অর্থনৈতিক উপদেষ্টা থাকার পাশাপাশি আইএমএফের মুখ্য পরামর্শদাতা ছিলেন তিনি। বিশ্ব ব্যাঙ্কের পরামর্শদাতা হিসাবেও কাজ করেছেন অশোক লাহিড়ী। বিজেপি সূত্রে খবর, সরকার তৈরির সময় অশোক লাহিড়ীর হাতেই অর্থ দফতরের ভার তুলে দিতে চান মোদী-অমিত শাহরা।
Comments are closed.