কাগজ বাঁচান, গাছ বাঁচান। এই আপ্তবাক্যে জোর দিয়ে পরিবেশ রক্ষায় বিশেষ উদ্যোগ নিচ্ছে রাজ্য সরকার। সূত্রের খবর, সরকারি অফিসে দৈনন্দিন কাগজের ব্যবহার যথাসম্ভব কম করার জন্য মনোযোগী হতে বলা হয়েছে আধিকারিক ও কর্মীদের।
গত কয়েক বছর ধরে নবান্নের তরফে ‘পেপারলেস ব্যুরোক্র্যাসি’, অর্থাৎ প্রশাসনিক কাজে কাগজের ব্যবহার কমিয়ে ডিজিটাল মাধ্যমের প্রয়োগ বাড়ানোর উপর জোর দেওয়া হচ্ছে। নবান্নের দাবি, এতে প্রশাসনিক কাজে যেমন স্বচ্ছতা বেড়েছে, কাজও দ্রুত হচ্ছে। তেমনি বাড়তি কাগজের ব্যবহারেও রাশ টানা গিয়েছে। এই প্রক্রিয়া এবার রাজ্যের সমস্ত রাজ্যের সমস্ত জেলার সরকারি অফিসে চালু করার পদক্ষেপ করেছে সরকার। নবান্ন সূত্রে খবর, ইতিমধ্যে দার্জিলিঙ, জলপাইগুড়ি, বীরভূম, দুই মেদিনীপুর, হাওড়া, হুগলির বিভিন্ন সরকারি অফিসে এই ব্যাপারে অনেকটাই কাজ এগিয়েছে। এই কাজের অগ্রগতি নিয়ে জেলা প্রশাসন থেকে নিয়মিতভাবে নবান্নে রিপোর্ট দেওয়া হচ্ছে।
কাগজের ব্যবহার কমানো এবং রিসাইকেল-বিনের এই উদ্যোগে পূর্ব বর্ধমান জেলার প্রশাসনের বাড়তি কাগজপত্র সেই জেলার সেলফ হেল্প গ্রুপকে ব্যবহারের জন্য দেওয়া হয়েছে। এতে একদিকে প্রশাসনিক কাজে কাগজের ব্যবহার কমানো হচ্ছে তেমনি, বাড়তি কাগজের পুনর্ব্যবহারের মাধ্যমে পরিবেশ রক্ষায় জোর বাড়ানো হচ্ছে।
জেলা প্রশাসনকে কী ধরনের নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে, তার একটা উদাহরণ দেওয়া যেতে পারে। যেমন, পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসক এক নির্দেশিকায় বলেছেন, জরুরি প্রয়োজন ছাড়া এক লাইন অথবা দু’-তিন লাইনের ই-মেলের প্রিন্ট আউট নেওয়ার প্রবণতা কমাতে হবে কর্মীদের। যদি তা একান্তই নিতে হয়, তবে সেটা আধ পৃষ্ঠার মধ্যে নিতে হবে। বাকি অংশ আবার অন্য প্রিন্ট আউটে যেন কাজে লাগানো হয়। আবার, প্রিন্ট আউট নেওয়ার পর যে কাগজগুলি আর কাজে লাগছে না, তা জঞ্জাল হিসেবে ফেলে না দিয়ে কিছু স্বনির্ভর গোষ্ঠীর হাতে তুলে দিতে হবে। তারা এগুলি রাইটিং প্যাড তৈরি করতে কাজে লাগাবে। বিভিন্ন সরকারি অফিসেই ওই প্যাডগুলি বিক্রি হতে পারে বলে নির্দেশিকায় বলা হয়েছে।
প্রশাসনিক স্তরে এইভাবে কাগজের অপচয় কমিয়ে পরিবেশ রক্ষায় জোর দিচ্ছে রাজ্য সরকার।
Comments are closed.