গোটা দেশে যে পরিমাণ সোনা রয়েছে, তার পাঁচ গুণ বেশি সোনার সন্ধান মিলল উত্তরপ্রদেশের সোনভদ্র জেলায়। বেশ কিছুদিন ধরেই সোনভদ্র জেলায় খননকার্য চলছিল। প্রশাসন সূত্রের খবর, সোনভদ্রের দুটি জায়গায় মাটির তলায় বিপুল সোনার সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। যা আমেরিকার পরই সোনা সংরক্ষণে ভারতকে দ্বিতীয় স্থানে নিয়ে আসতে পারে। উত্তরপ্রদেশ সরকার ও জিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার (জিএসআই) যৌথ উদ্যোগে এই সোনা উদ্ধার হয় বলে খবর।
সোনপাহাড়ি ও হারদি অঞ্চলে এই সোনার খনির সন্ধান পাওয়া গিয়েছে বলে জানান সোনভদ্রের খনি আধিকারিক কে কে রাই। সন্ধান পাওয়া ৩ হাজার টনের বেশি সোনার আনুমানিক মূল্য ১২ লক্ষ কোটি টাকা। সরকারি তথ্য বলছে, সারা দেশে এই মুহূর্তে ৬২৬ টনের কাছাকাছি সোনা রয়েছে। আর সোনভদ্র জেলার এই দুই অঞ্চলেই শুধু ৩ হাজার টনের বেশি সোনা সঞ্চিত রয়েছে। অর্থাৎ, এই মুহূর্তে গোটা দেশে সংরক্ষিত সোনার চেয়ে পাঁচ গুণ বেশি সঞ্চিত রয়েছে উত্তরপ্রদেশের সোনভদ্র জেলাতেই। শুধু তাই নয়, বিশেষজ্ঞদের অনুমান সত্যি হলে আমেরিকার পরই সংরক্ষিত সোনার পরিমাণ হিসেবে দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসবে ভারত। ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিলের হিসেব অনুযায়ী, বিশ্বের সবচেয়ে বেশি সোনা সংরক্ষিত আছে আমেরিকায়, পরিমাণ প্রায় ৮ হাজার ১৩৪ টন। আমেরিকার পর রয়েছে জার্মানি। তাদের সোনা সংরক্ষণের পরিমাণ ৩ হাজার ৩৬৬ টন। জিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার তরফে অনুমান করা হচ্ছে, শুধু সোনপাহাড়ি এলাকা থেকে উদ্ধার হওয়া সোনার পরিমাণ ২ হাজার ৭০০ টন। আর হারদি থেকে পাওয়া গিয়েছে ৬৫০ টন সোনা। সেখানে শীঘ্রই ই-টেন্ডারিং শুরু হবে বলে খবর।
দীর্ঘদিন ধরে সোনভদ্রে সোনার সুলুকসন্ধান করছিল জিএসআই। ১৯৯২-৯৩ সাল নাগাদ ওই অঞ্চলে সোনা থাকার সম্ভাবনার কথা জানিয়েছিল জিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া। ২০০৫ সাল থেকেই সোনভদ্রের বিভিন্ন অঞ্চলে শুরু হয় খননের কাজ। দীর্ঘ গবেষণার পরে ২০১২ সাল নাগাদ সোনার উপস্থিতির প্রমাণ পান বিশেষজ্ঞরা। তবে শুধু সোনা নয়, সংশ্লিষ্ট এলাকায় ইউরেনিয়াম থাকার সম্ভাবনাও প্রবল বলে জানাচ্ছেন খনি আধিকারিক কে কে রাই। তিনি জানান, ইউরেনিয়ামের খোঁজেও তাড়াতাড়ি সন্ধান শুরু করবেন তাঁরা।
মজার ব্যাপার হল, মাওবাদী অধ্যুষিত উত্তরপ্রদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম জেলা সোনভদ্রই দেশের একমাত্র জেলা, যা একসঙ্গে চারটি রাজ্য- মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড়, ঝাড়খণ্ড ও বিহারের সীমান্ত ছুঁয়ে গিয়েছে।
Comments are closed.