বুধবার নাটমঞ্চ ছিল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর। আর বৃহস্পতিবার সকালে নাটকের মঞ্চ হয়ে উঠল বিধানসভা ভবনের প্রাঙ্গণ। বিধানসভা অধিবেশন স্থগিত থাকলেও পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী সকাল সাড়ে দশটাতেই নিরাপত্তা রক্ষী পরিবেষ্টিত হয়ে বিধানসভা ভবনে গেলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। সেখানেও হল বিস্তর নাটক। নিরাপত্তা রক্ষী ও অফিসারদের নিয়ে তিনি রীতিমতো বিধানসভা চত্বরে দাপিয়ে বেড়ান। রাজভবন থেকে তিনি দুটি বিল সই করে পাঠাননি বলে বিধানসভার অধিবেশন বুধ ও বৃহস্পতিবার স্থগিত রাখা হয়। তারপরও রাজ্যপাল কেন বৃহস্পতিবার বিধানসভায় গেলেন তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সংবিধান বিশেষজ্ঞদের অনেকেই রাজ্যপালের এই আচরণ-কে নজিরবিহীন বলে মনে করছেন। রাজ্যপালের যুক্তি, বিধানসভার অধিবেশন স্থগিত থাকলেও বিধানসভা তো বন্ধ থাকতে পারে না। পাশাপাশি, তাঁর দাবি, তিনি সংবিধান মেনেই কাজ করছেন। রাজ্যপালের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ রাজ্য সরকারও। পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চ্যাটার্জি বলেন, রাজ্যপাল রাজ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির জন্য এ সব নাটক করছেন। রাজ্যপালের পাল্টা অভিযোগ, রাজ্য সরকার তাঁর সঙ্গে চূড়ান্ত অসহযোগিতা করছে।
সাধারণত যে ৩ নম্বর গেট দিয়ে রাজ্যপাল প্রবেশ করেন, সেই গেট বন্ধ ছিল। ফলে নিরাপত্তা রক্ষীরা রাজ্যপালকে অন্য গেট দিয়ে বিধানসভায় ঢোকানোর ব্যবস্থা করেন। আগের দিন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে উপাচার্য সহ কোনও আধিকারিকই উপস্থিত ছিলেন না আচার্য তথা রাজ্যপালকে স্বাগত জানানোর জন্য। তার জন্য তিনি উষ্মা প্রকাশও করেন। একই ঘটনা ঘটল বৃহস্পতিবার বিধানসভা ভবনে। স্পিকার বিমান ব্যানার্জি থেকে শুরু করে কেউই বিধানসভা চত্বরে হাজির ছিলেন না। রাজ্যপাল জানান, স্পিকার তাঁকে সস্ত্রীক আমন্ত্রণ করেছিলেন। এমনকী খাওয়ার কথাও বলেছিলেন। তিনিও স্পিকারকে বিধানসভায় আসবেন বলে জানিয়েছিলেন। কিন্তু আচমকাই স্পিকারের দফতর থেকে রাজ্যপাল দফতরকে জানিয়ে দেওয়া হয় তিনি উপস্থিত থকতে পারছেন না। গোটা ঘটনায় চরম ক্ষুব্ধ রাজ্যপাল গেটের সামনেই সাংবাদিকদের বলেন, আমি অপমানিত, আমি রক্তাক্ত। এইভাবে গণতন্ত্র চলতে পারে না।
Comments are closed.