যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে তুমুল বিক্ষোভের মুখে রাজ্যপাল

বিনা আমন্ত্রণে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কোর্ট বৈঠকে যোগ দিতে গিয়ে সোমবার ক্যাম্পাসে তুমুল বিক্ষোভের মুখে পড়লেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। বিজেপি বাদে বাম-ডান নির্বিশেষে সব সংগঠনের সমর্থক পড়ুয়ারাও হাজির ছিলেন। ছিলেন শিক্ষকর্মীরাও। তাঁদের হাতে ছিল কালো পতাকা। ‘বিজেপির দালাল রাজ্যপাল গো ব্ল্যাক’ স্লোগান। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, এনআরসি এবং নাগরিকত্ব আইনের সমর্থনে রাজ্যপাল যেভাবে কথা বলছেন, তাতে পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে, তিনি আরএসএস এবং বিজেপির মুখপাত্রের ভূমিকা নিয়েছেন। সারা দেশে পড়ুয়াদের উপর পুলিশ অত্যাচার করছে। অথচ রাজ্যপাল তথা আচার্য সে ব্যাপারে মুখে কুলুপ এঁটে বসে রয়েছেন। এই আচার্যকে তাঁরা মানেন না। বিক্ষোভকারীরা তাঁর গাড়ির বনেটের উপর এনআরসি বিরোধী পোস্টার লাগিয়ে দেন। রাজ্যপালকে গাড়ির ভিতর থেকে হাত জোড় করে বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশে নমস্কার করতে দেখা যায়। প্রায় ৫০ মিনিট এই অবস্থা চলার পর ছাত্ররা জানান, তাঁরা রাজ্যপালকে কোর্ট রুমে ঢুকতে দিতে রাজি আছেন। কিন্তু তাঁকে কথা দিতে হবে, তিনি বৈঠক শেষে  পড়ুয়াদের সব প্রশ্নের উত্তর দেবেন। এর পর কড়া পাহারায় তিনি কোর্ট রুমে যান। কিন্তু রাজ্যপাল শেষ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের কোর্ট বৈঠকে যোগ দেননি। ওই ঘর থেকে বেরিয়ে তিনি বাইরে দাঁড়িয়েই পড়ুয়াদের নানা প্রশ্নের জবাব দেন। জগদীপ জানান, যেই প্রশ্ন তাঁর এক্তিয়ারের মধ্যে পড়ে, তিনি তার জবাব দেবেন। অন্যগুলির জবাব দেবেন না। পড়ুয়ারা এনআরসি নিয়ে দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আন্দোলনের উপর পুলিশি অত্যাচার নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চান। রাজ্যপাল জানান, তিনি যে কোনও অস্থিরতার বিরোধী। এনআরসি নিয়ে ছাত্ররা আলোচনা করতে এলে তিনি তাঁদের কথা শুনবেন বলে জানান। এনআরসি নিয়ে তাঁর মনোভাব কী, জানতে চাওয়া হলে রাজ্যপাল জানান, পড়ুয়ারা ডেপুটেশন দিতে এলে তিনি সব শুনে যা বলার, বলবেন। গোটা পর্বে চলে বিক্ষোভ স্লোগান। শেষে তিনি বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়েন।
এর আগে বিশেষ সমাবর্তন স্থগিত রাখার যে সিদ্ধান্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মসমিতি নেয়, তাকে অবৈধ বলে ঘোষণা করেন রাজ্যপাল। ওই সিদ্ধান্ত সোমবার কোর্টের বৈঠকে অনুমোদিত হওয়ার কথা ছিল। রাজ্যপাল রবিবার জানান, তিনি বৈঠকে যাবেন এবং সভাপতিত্ব করবেন। এদিন তিনি ক্যাম্পাসে যাওয়া মাত্রই চূড়ান্ত নাটকীয় পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।

Comments are closed.