আগামী ৭২ ঘণ্টা কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গে বজ্রপাত সহ বৃষ্টির পূর্বাভাস, উত্তরে বন্যার ভ্রূকুটি

কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গে আগামী ৭২ ঘণ্টা বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির পূর্বাভাস দিল আবহাওয়া দফতর। উত্তরবঙ্গে মঙ্গলবার বৃষ্টি কিছুটা কমবে বলে পূর্বাভাস দিলেও বুধবার থেকে ফের বৃষ্টি বাড়তে পারে বলে জানাচ্ছে হাওয়া অফিস।

রবিবার উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় আকাশ কালো করে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টি হয়। কলকাতা ছাড়াও হাওড়া, হুগলি, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায়, নদিয়া, বর্ধমান-সহ বিভিন্ন জেলায় বিভিন্ন প্রান্তে বৃষ্টির সঙ্গে চলে ঝোড়ো হাওয়া। সোমবারও ভারী বৃষ্টি উত্তরবঙ্গের জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, দার্জিলিং, কালিম্পং এবং কোচবিহারে। বাকি জেলাগুলিতে বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি হতে পারে। মঙ্গলবার বৃষ্টি কমতে পারে কিন্তু বুধবার থেকে ফের ভারী বৃষ্টির আশঙ্কা উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে। ইতিমধ্যেই কয়েকটি জেলায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

সেই সঙ্গে রাজ্যে বজ্রপাত বাড়ছে। শনিবারই মুর্শিদাবাদে বাজ পড়ে ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। আবহাওয়া দফতর জানাচ্ছে, কোনও ঘূর্ণাবর্ত বা নিম্নচাপ নয়, কলকাতা-সহ গাঙ্গেয় বঙ্গের আকাশে একাধিক বজ্রগর্ভ মেঘপুঞ্জ সৃষ্টির ফলেই প্রবল বর্ষণ। আবহবিদদের মতে, কালবৈশাখীর সময় এমন বড় বড় মেঘ তৈরি হতে দেখা গেলেও বর্ষাকালে সচরাচর তা দেখা যায় না। আবহবিদদের একাংশের মতে, বায়ুমণ্ডলের নীচের ও উপরের স্তরে তাপমাত্রার অনেক ফারাকের ফলে জলীয় বাষ্প দ্রুত ঘনীভূত হচ্ছে। জলীয় বাষ্পের জোগানে মেঘের আকার বেড়েছে এবং দীর্ঘ সময় ধরে বর্ষণ হচ্ছে।

আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানাচ্ছে, মৌসুমি অক্ষরেখা উত্তরবঙ্গ থেকে ধীরে ধীরে দক্ষিণে আসছে। বঙ্গোপসাগর থেকে ঢুকছে জোরালো মৌসুমি বায়ু। সেই জলীয় বাষ্পপূর্ণ হাওয়া অক্ষরেখার প্রভাবে দ্রুত ঘনীভূত হয়ে বজ্রগর্ভ মেঘ তৈরি করেছে। রবিবার শহরতলিতে বৃষ্টির মাত্রা ছিল বেশি। উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলিতে বেশ ভালোই বৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টি হয়েছে দুই মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, নদিয়া জেলায়। কলকাতার দমদম ক্যান্টনমেন্ট এবং শহরতলির অন্যান্য এলাকায় অনেক ঘরে ও দোকানে জল ঢুকেছে। জল জমেছে দমদম, পাতিপুকুর আন্ডারপাস, চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ, মহাত্মা গান্ধী রোড, মুক্তারামবাবু স্ট্রিট, উত্তর বন্দর থানা লাগোয়া এলাকায়।

সোমবার শহরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৪ ডিগ্রি এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা স্বাভাবিকের চেয়ে ২ ডিগ্রি কম। রবিবার সকাল সাড়ে আটটা থেকে সোমবার সকাল সাড়ে আটটা পর্যন্ত ১২৯.২ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।

Comments are closed.