স্কুলে যেতে রোজ ৭০ কিমি পথ পাড়ি দিতে হত, চায়ের দোকানে কাজ করে কোনও কোচিং ছাড়াই IAS হয়েছেন হিমাংশু গুপ্তা
স্কুলে যাতায়াতের জন্য ৭০ কিমি পথ পাড়ি দিতে হত। কোনওরকম কোচিং ছাড়াই ইউপিএসসি পরীক্ষায় সফল হয়ে IAS হয়েছেন হিমাংশু গুপ্তা। দিনমজুর বাবার সন্তান হওয়ায় ছোট থেকে বেশ প্রতিকূলতার মধ্যেই বড় হতে হয়েছিল হিমাংশুকে। সব প্রতিকূলতাকে জয় করে ২০২০ সালে গোটা দেশে ইউপিএসসি সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় ১৩৯ নম্বরে স্থান করেছিল সে। একবার নয় ইউনিয়ন পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (UPSC) সিভিল সার্ভিস পরীক্ষা (CSE) তিনবার সফল হয়েছেন তিনি।
উত্তরাখণ্ডের উধম সিংহ জেলার সিতারগঞ্জে জন্ম হিমাংশুর। ক্লাস টুয়েলভের পরেই UPSC CSE-তে উত্তীর্ণ হওয়ার ইচ্ছা হয় তাঁর। সংসার চালাতে হিমশিম খেতেন দিনমজুর বাবা। একটি চায়ের স্টল চালাতেন তিনি। বেশ কয়েকবার হিমাংশুকে সেখানে কাজ করতে হয়। বেশিরভাগ সময় কাজের খোঁজে বাইরে বাইরে যেতে হত তাঁর বাবাকে। তাই বাবাকে ছোটবেলায় খুব একটা কাছে পাননি। শেষ পর্যন্ত বারেলির শিবপুরে দাদু-দিদার বাড়িতে আশ্রয় নিতে হয় তাঁর পরিবারকে। সেখানেই সরকারি স্কুলে চলে তাঁর পড়াশোনা।
২০০৬ সালে তাঁরা বারেলির সিরাউলিতে চলে আসেন। যেখানে তাঁর বাবা একটি জেনারেল স্টোর খুলেছিলেন। তিনি সেইসময় হিমাংশুকে প্রাথমিক শিক্ষার জন্য একটি ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে ভর্তি করেন। সেই স্কুলটি ছিল ৩৫ কিমি দূরে। যাতায়াত করতে হত রোজ ৭০ কিমি। দিল্লি ইউনিভার্সিটির হিন্দু কলেজে ভর্তি হওয়ার পরই তাঁর মাথায় ঢোকে সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার চিন্তা।
হিন্দু কলেজে ভর্তি না হওয়া পর্যন্ত, হিমাংশু নিজেকে একজন ভীতু মনে করতেন। হিন্দু কলেজে ভর্তি হয়ে অন্য পড়ুয়াদের দেখে নিজের মধ্যে জড়তা কাটিয়েছিলেন হিমাংশু। স্নাতক শেষ করার পর, হিমাংশু পরিবেশ বিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর ডিগ্রির লাভ করেন। ইউনিভার্সিটিতে প্রথম স্থান অধিকার করায় বিদেশে পিএইচডি করার সুযোগও আসে। মাত্র তিন মাসের মধ্যে তিনি সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন দেশের আমলা হওয়ার।
২০১৮ সালে প্রথমবার হিমাংশু ভারতীয় রেলওয়ে ট্রাফিক সার্ভিসে (IRTS) পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। এরপর ২০১৯ সালে আইপিএস পরীক্ষায় সফল অবশেষে ২০২০ সালে তৃতীয়বার Civil Service Examination (CSE) পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে IAS হন।
Comments are closed.