একদিন আগেই নিজের দল তৈরি করেছেন। এবার দলের নীতিও স্পষ্ট করলেন জম্মু-কাশ্মীরের প্রাক্তন আইএএস শাহ ফয়জল। সোমবার সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘আমি দিল্লির এজেন্ট নই। উপত্যকার মানুষের জন্যই আমার আন্দোলন। সেখানে কোনও আপোশের জায়গা নেই।‘
উপত্যকায় নির্বিচারে কাশ্মীরিদের হত্যার প্রতিবাদে ও উগ্র হিন্দুত্বপন্থীদের দ্বারা ভারতীয় মুসলিমদের কোণঠাসা করার অভিযোগ তুলে জানুয়ারি মাসেই চাকরি থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন জম্মু-কাশ্মীরের এই আইএএস অফিসার। এরপরেই তাঁর প্রত্যক্ষ রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার ব্যাপারে জল্পনা তৈরি হয়েছিল। সেই জল্পনা সত্যি করে ‘জম্মু-কাশ্মীর পিপলস মুভমেন্ট’ দলের সূচনা করেন শাহ ফয়জল।
রবিবার কাশ্মীরের রাজবাগের গিনদুন মাঠে জম্মু-কাশ্মীরের রাজনৈতিক দলগুলিকে তীব্র আক্রমণ শানান শাহ ফায়জল। তিনি বলেন, যে রাজনৈতিক দলগুলি তাঁকে দলে টানার চেষ্টা করেছিল, নিজের রাজনৈতিক দল তৈরির করার পর সেই দলগুলির নেতারাই আক্রমণ শানাচ্ছেন প্রাক্তন আইএএসের দিকে। তাঁকে দিল্লি বা আরএসএসের এজেন্ট বলে নিন্দা করছেন। ২০১০ সালে সিভিল সার্ভিস প্রতিযোগিতায় প্রথম হওয়া শাহ ফয়জল বলেন, ‘এজেন্ট’ হওয়ার জন্য কেউ লোভনীয় চাকরি ছাড়ে না।
শাহ ফয়জল বলেন, প্রত্যক্ষ রাজনীতিতে যোগদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণের পর বেশ কয়েকটি মূলধারার রাজনৈতিক দলের সঙ্গে তাঁর আলোচনা হয়েছিল। কিন্তু এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই উপত্যকার মানুষরা তাঁর ওপর ক্ষুব্ধ হন। যে রাজনৈতিক দলগুলির হাতে টাটকা রক্তের দাগ, তাদের প্রতিনিধি হিসেবে উপত্যকার সাধারণ মানুষ তাঁকে দেখতে চাননি। তারপরেই নিজের দল তৈরির সিদ্ধান্ত নেন শাহ ফয়জল, বলে দাবি তাঁর। আর তাঁর স্বতন্ত্র দল তৈরির মতো ‘কঠিন সিদ্ধান্ত’ নেওয়ার জন্য জম্মু-কাশ্মীরের সাধারণ মানুষকে ধন্যবাদ জানান শাহ ফয়জল। রাজনীতির ময়দানে নেতা হিসেবে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ও দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী তথা আম আদমি পার্টি সুপ্রিমো অরবিন্দ কেজরিওয়ালের ভূয়সী প্রশংসা করেন শাহ ফয়জল। যতদিন পর্যন্ত মহিলাদের সার্বিক নিরাপত্তা প্রদান করা যাবে না, নতুন প্রজন্ম যতদিন পর্যন্ত অনিশ্চয়তায় বাঁচবে, ততদিন শুধুমাত্র রাস্তা, স্কুল বা জল সরবরাহের মতো উন্নয়নের কাজ করে উপত্যকার উন্নতি করা সম্ভব নয়, বলে এদিন দাবি করেন ফয়জল। কাশ্মীরবাসীর আশা পূরণই হবে তাঁর দলের একমাত্র লক্ষ্য বলেও এদিন মন্তব্য করেন জম্মু-কাশ্মীর পিপল’স মুভমেন্ট দলের প্রতিষ্ঠাতা। প্রথমদিনই শাহ ফয়জলের দলে যোগ দিয়েছেন জেএনইউ-এর প্রাক্তন ছাত্র নেত্রী তথা সমাজকর্মী শেহলা রশিদ, ব্যবসায়ী বলদেব সিংহ রায়না, ফিরোজ পীরজাদা, ইকবাল তাহির।
Comments are closed.