৭ সেপ্টেম্বর লাইন অফ অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোলে ভারতীয় সেনার ফরোয়ার্ড পজিশনে চিনা সেনা PLA উসকানিমূলক কার্যকলাপ চালাচ্ছে। উত্তেজনা তৈরি করতে ওপার থেকে শূন্যে গুলি (সামরিক পরিভাষায় ওয়ার্নিং শটস) চালানো হয়েছে। ভারতীয় সেনা এখনও ধৈর্য রেখেছে। বাড়াবাড়ি হলে জবাব দেওয়ার পথ খোলা।
সোমবার প্যাংগং সোর দক্ষিণ তটে বিনা প্ররোচনায় ভারতীয় সেনার গুলি চালানোর পিএলএর অভিযোগের এভাবেই জবাব দিল ভারতীয় সেনা। সোমবার ভারতীয় সময় রাত সাড়ে এগারোটা নাগাদ চিনের পিপলস লিবারেশন আর্মি প্রেস বিবৃতি দিয়ে প্যাংগং সোর দক্ষিণ তটে ভারতীয় সেনার বিরুদ্ধে বিনা প্ররোচনায় গুলি (সামরিক পরিভাষায় ওয়ার্নিং শটস) ছোড়ার অভিযোগ করে। ভারতীয় সেনা এলএসি অতিক্রম করে এই কাণ্ড ঘটিয়েছে বলেও দাবি ছিল চিনের সেনা বাহিনীর।
মঙ্গলবার সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ বিবৃতি প্রকাশ করে ভারতীয় সেনা। সেখানে চিনের সমস্ত দাবি উড়িয়ে পাল্টা অভিযোগ করা হয়, চিনের পিএলএ ঘরোয়া ও আন্তর্জাতিক দর্শকদের খুশি করতে সীমান্তে ক্রমাগত উসকানিমূলক কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। যেখানে ভারতীয় সেনা দায়িত্ববোধের পরিচয় দিয়েছে। ১৯৭৫ সালের পর আমাদের দিক থেকে এক রাউন্ড গুলিও চলেনি। জানাচ্ছে ভারতীয় সেনা।
এদিকে লাদাখ এলাকায় সীমান্ত পরিস্থিতি ক্রমেই জটিল থেকে জটিলতর হয়ে উঠছে। গালওয়ান সংঘর্ষের পর থেকে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা জারি রয়েছে ঠিকই কিন্তু তাতে কতটা ফল হচ্ছে তা নিয়ে সন্দিহান কূটনীতিকরা। সম্প্রতি মস্কোয় চিন ও ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর বৈঠক ব্যর্থ হয়েছে। এই সপ্তাহেই সেই মস্কোতেই ফের মুখোমুখি হচ্ছেন দুই দেশের বিদেশমন্ত্রী। সেই বৈঠকে কি মিলবে কোনও সমাধানসূত্র? সেই উত্তর অধরা হলেও সোমবার বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এই প্রসঙ্গে তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য করেছেন। ইংরেজি দৈনিক দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস আয়োজিত এক্সপ্রেস আড্ডার সোমবারের অতিথি ছিলেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। সেখানে দুই পরমাণু শক্তিধর দেশের সাম্প্রতিক সীমান্ত গোলমালের প্রেক্ষিতে মন্ত্রী বলেন, পূর্ব লাদাখের পরিস্থিতি অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এখনই রাজনৈতিক স্তরে বিস্তারিত আলোচনা প্রয়োজন।
এখন বড়ো প্রশ্ন হল, সমান্তরাল রাজনৈতিক আলোচনায় সমাধানসূত্র না এলে কী হবে? সামরিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চিনের সেনা মোতায়েনের জবাব দিতে ভারতীয় সেনাও লাদাখ অঞ্চলে বিপুল সেনা মোতায়েন করেছে। এই পরিস্থিতিতে চিনের পক্ষে এলএসি বরাবর কোনও হঠকারি পদক্ষেপ নেওয়া কঠিন। অন্যদিকে ভারতের সেনা সমাবেশ ক্রমেই বাড়ছে। যা চিনের দুশ্চিন্তার অন্যতম কারণ। সবমিলিয়ে লাদাখ অঞ্চলে এখন মুখরক্ষার পথ খুঁজতে ব্যস্ত চিনের পিপলস লিবারেশন আর্মি।
Comments are closed.