ট্রেনের অবস্থান, গতিবেগ সহ সমস্ত তথ্য জানতে রেল দফতর সঙ্গে যুক্ত হল ইসরোর স্যাটেলেইটের সঙ্গে

ভারতীয় রেলকে ইসরো স্যাটেলাইটের সঙ্গে যুক্ত করে যুগান্তকারী পদক্ষেপ ভারতীয় রেলের। প্রত্যন্ত অঞ্চলে ট্রেনের নির্ভুল অবস্থান, গতি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল থাকা ছাড়াও, বিপর্যয় মোকাবিলা ও রেল কর্তৃপক্ষকে আগাম পরিকল্পনা সহ খুঁটিনাটি বিষয়ে প্রস্তুত রাখতে বিশেষ সাহায্য করবে ইন্ডিয়ান স্পেস রিসার্চ অর্গানাইজেশনের (ইসরো) এই স্যাটেলাইট।
১৪ ই অক্টোবর ইংরেজি দৈনিক ইকোনমিক টাইমসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইসরো স্যাটেলাইটের সৌজন্যে এখন থেকে আইআর কন্ট্রোলারকে আর ম্যানুয়াল তথ্যের উপর নির্ভর করতে হবে না। ট্রেন পরিচালনায়, ট্রেনের গতি নিয়ন্ত্রণ থেকে ট্রেন দাঁড়ানো, মুহূর্তের মধ্যে সংশ্লিষ্ট ট্রেনের তথ্য পেয়ে যাবেন আইআর কন্ট্রোলার। মাত্র ৩০ সেকেন্ডের মধ্যে ট্রেনের অবস্থান থেকে গতি সম্পর্কে রেল কর্তৃপক্ষকে তথ্য যোগাবে ইসরোর গগন (জিপিএস এডেড জিয়ো অগমেন্টেড নেভিগেশন) স্যাটেলাইট, যা প্রাথমিকভাবে তৈরি হয়েছিল ভারতীয় আকাশসীমার জন্য।
কীভাবে কাজ করবে এই স্যাটেলাইট? রিয়েলটাইম ট্রেন ইনফর্মেশন সিস্টেমের (আরটিআইএস) সঙ্গে এক লোকোমোটিভ যুক্ত করা হয়। এর দুটি ইউনিট আছে। একটি থাকবে সংশ্লিষ্ট ট্রেন ইঞ্জিনে এবং অপরটি থাকবে রেলের উপর মহলের কাছে। প্রতি ৩০ সেকেন্ড অন্তর ট্রেনের অবস্থান, গতি, স্টেশন থেকে বেরনো এবং ঢোকা, বিভিন্ন স্টেশনে কোন সময়ে ঢুকছে তার পুরো তথ্য পেতে থাকবে রেলের কন্ট্রোল রুমে। ইসরোর স্যাটেলাইটের সৌজন্যে প্রত্যন্ত জায়গা থেকেও ট্রেনের অবস্থান জানতে কোনও সমস্যা হবে না।
ইকোনমিক টাইমসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, যদি কোনও ট্রেনের গতির অনুমোদন থাকে ঘন্টায় ১০০ কিলোমিটার। অথচ ট্রেনটি ঘন্টায় ৬০ বা ৭০ কিলোমিটার বেগে চলে, ইসরোর স্যাটেলাইট প্রযুক্তির সাহায্যে চটজলদি সেই খবর পৌঁছে যাবে আইআর কন্ট্রোলারের কাছে। এই স্যাটেলাইট ব্যবহারের আগে কেবলমাত্র ট্রেনের আসা-যাওয়া এবং কোন স্টেশনের মধ্য দিয়ে সংশ্লিষ্ট ট্রেন যাত্রা করছে এসব সম্পর্কে ওয়াকিবহাল থাকত রেল কর্তৃপক্ষ। ইকোনমিক টাইমসকে দেওইয়া এক সাক্ষাৎকারে রেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আগামী ১ বছরের মধ্যে পুরো রেলের পুরো নেটওয়ার্ক কভার করবে এই স্যাটেলাইট।
ট্রেনের স্টেটাস সম্পর্কে সঠিক তথ্য পাবেন যাত্রীরা। অনির্ধারিত স্টেশনে ট্রেন দাঁড়ালে বা কোনওরকম সমস্যার মুখোমুখি হলে চটজলদি খবর পাবে রেল কর্তৃপক্ষ। এবং দ্রুত সমস্যা সমাধানে পদক্ষেপ করা হবে। কম গতিতে ট্রেন চললে তা শনাক্ত করা হবে। এক বোতামের চাপেই রেলের কন্ট্রোল রুমে সংশ্লিষ্ট জরুরি বার্তা পাঠাতে পারবেন লোকোপাইলটরা।
সেন্টার ফর রেলওয়ে ইনফর্মেশন সিস্টেমের ম্যানেজিং ডিরেক্টর মুকেশ নিগম ইকোনমিক টাইমসকে জানান, এখন ৬ হাজার লোকোমোটিভের সঙ্গে এই সিস্টেম সংযুক্ত করা গিয়েছে। আগামী এক বছরের মধ্যে সব লোকোমোটিভকে এই প্রযুক্তির আওতায় আনা হচ্ছে।

Comments are closed.