মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মাথার দাম ঘোষণা করল তেহেরান। মার্কিন হামলায় নিহত সেনাপ্রধান কাসেম সোলেমানির শেষকৃত্য অনুষ্ঠান থেকেই জানিয়ে দেওয়া হল, ট্রাম্পের মাথার দাম ৮ কোটি ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় ৫৭৬ কোটি টাকা)। যে ওই ‘উন্মাদকে’ মারতে পারবে, সব টাকা সেই পাবে। এর তহবিল গঠনের জন্য প্রত্যেক ইরানিকে ১ ডলার করে দিতে হবে। সোলেমানির শেষকৃত্যে তাঁর কফিনের সামনে দাঁড়িয়ে কেঁদে ফেলেছিলেন ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় গুরু আয়াতোল্লা আলি খামেনেই। তাঁর উপস্থিতিতেই মার্কিন প্রেসিডেন্টের মাথার দাম ঘোষণা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জনতা উল্লাসে ফেটে পড়ল। রবিবার একদিকে যখন সোলেমানির শেষকৃত্য হচ্ছে, তখন অন্যদিকে ইরানের পার্লামেন্ট জরুরি বৈঠক ডেকে ২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসার কথা জানিয়ে দিল তেহেরান।
এদিকে ইরানকে উচিত শিক্ষা দেওয়ার কথা জানিয়ে নিজের দেশে খুব স্বস্তিতে নেই ট্রাম্প। তাঁর হুমকি, ইরানের ৫২ টি টার্গেট ঠিক করে ফেলা হয়েছে। ঠিক সময়ে সেগুলির উপর হামলা করা হবে। ট্রাম্পের দাদাগিরির প্রতিবাদে আমেরিকার ৮০ টি শহরে রবিবার মিছিল হয়েছে। ট্রাম্পকে আটকানোর জন্য এই সপ্তাহেই মার্কিন কংগ্রেসে ‘যুদ্ধবাজ শক্তির ঘোষণাপত্র’ এনে ভোটাভুটি করা হবে বলে জানিয়েছেন স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি।
ট্রাম্প নিজেই জানিয়েছেন, লক্ষ লক্ষ মার্কিন নাগরিকের হত্যাকারী সোলেমানিকে পরিকল্পনা করেই মারা হয়েছে। তাঁর দাবি, সোলেমানিকে আরও আগে শেষ করে দেওয়া উচিত ছিল। তাঁর শেষকৃত্য অনুষ্ঠান থেকেই আমেরিকাকে উদ্দেশ্য করে বলা হয়েছে, তোমরা পরিকল্পনামাফিক অন্যায়ভাবে সোলেমানিকে হত্যা করেছ। তাই আমরাও আর পরমাণু চুক্তির শর্ত মানতে রাজি নই। বদলা আমরা নেবই। ইরানের এমপি আবোলফজল আবোতরাবি বলেছেন, হোয়াইট হাউসেই আমরা হামলা চালাতে পারি। সে ক্ষমতা আমরা রাখি। আমেরিকা আগেই এই চুক্তি থেকে বেরিয়ে এসেছে। পরমাণু চুক্তির এই অকাল মৃত্যুতে তার পরিণতি কী হবে, তা ভেবে দুশ্চিন্তায় আন্তর্জাতিক মহল। ফ্রান্স, জার্মানি, ব্রিটেন বিবৃতি দিয়ে বলেছে, আঞ্চলিক স্থিতাবস্থা বজায় রাখার জন্য আমরা সব পক্ষের সঙ্গে কথা বলতে পারি। ইউরোপীয় ইউনিয়নও ইরাঙ্কে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করতে অনুরোধ করেছে।
Comments are closed.