বাংলার গুরুত্বপূর্ণ বিধানসভা কেন্দ্রগুলোর মধ্যে অন্যতম যাদবপুর। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের কেন্দ্র হিসেবে একসময় রাজ্যের বামদূর্গের অন্যতম কেন্দ্র ছিল যাদবপুর। এবার সেই কেন্দ্রে লড়াই মূলত ত্রিমুখী।
১৯৬৭ সাল থেকেই যাদবপুরের দখল বামেদের কাছে। ১৯৮৭ সালে প্রথমবার যাদবপুর কেন্দ্রের প্রার্থী হন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। তারপর ১৯৮৭, ১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০১ ও ২০০৬ সালে পরপর ৫ বার এই কেন্দ্র থেকে জয়ী হন বুদ্ধদেববাবু। ২০০৬ সালে ৫৭ হাজার ভোটে জেতেন তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য।
৩৪ বছরের বাম জমানার অবসান ঘটিয়ে ২০১১ সালে ক্ষমতায় আসে তৃণমূল। যাদবপুরে তৃণমূলের মণীশ গুপ্তের কাছে হেরে যান বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। ব্যবধান ছিল ১৭ হাজার ভোটের। প্রাক্তন আমলা মণীশ গুপ্ত জায়ান্ট কিলার তকমা পান। কিন্তু যাদবপুর ধরে রাখতে পারেনি তৃণমূল। ২০১৬ সালে উদ্বাস্তু অধ্যুষিত যাদবপুরে জয় ছিনিয়ে নেয় সিপিএম। জেতেন সুজন চক্রবর্তী। ২০২১ সালে সিপিএম প্রার্থী করেছে বিদায়ী বিধায়ক সুজনকেই। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী কাউন্সিলার থেকে এই প্রথম বিধানসভায় লড়তে আসা তৃণমূলের দেবব্রত মজুমদার।
শুধু সিপিএম-তৃণমূল নয় যাদবপুরে জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী সদ্য সিপিএম ছেড়ে বিজেপিতে যাওয়া রিঙ্কু নস্করও। ২০২০ সালে সিপিএম ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন কাউন্সিলার রিঙ্কু।
২০১৪ লোকসভা ভোটে দক্ষিণ ২৪ পরগনার মথুরাপুর থেকে রিঙ্কুকে প্রার্থী করেছিল সিপিএম। সেবার জিততে পারেননি বাম প্রার্থী রিঙ্কু। কিন্তু একুশের ভোটে বিজেপির টিকিটে তিনিই জিতবেন বলে দাবি করছেন একদা সুজন চক্রবর্তীর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত রিঙ্কু।
[আরও পড়ুন- নেই মিঠুনের নাম, আরও ১৩ কেন্দ্রের প্রার্থী ঘোষণা BJP র, চৌরঙ্গীতে নতুন প্রার্থী]
উদ্বাস্তু অধ্যুষিত যাদবপুর কেন্দ্রে এখনও একটি বড়ো ভোটের নিয়ন্ত্রণ সিপিএমের হাতে রয়েছে বলে দাবি বামদের। সেই ভোটে ভর করেই ২০১৬ সালে বাজিমাত করেছিলেন সুজন চক্রবর্তী। এবার কী হবে? রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, যাদবপুরে বাম ভোট এখনও অটুট সে কথা যেমন ঠিক তেমনই তৃণমূলের প্রার্থী মলয় ওরফে দেবব্রত মজুমদারের পরিচিতি, প্রভাব এবং স্বচ্ছ ভাবমূর্তি অস্বীকার করার জায়গা নেই। তাই লড়াই এবার সেয়ানে সেয়ানে।
কম যান না প্রাক্তন সিপিএম বর্তমানে বিজেপি প্রার্থী রিঙ্কু নস্করও। এলাকায় লড়াকু নেত্রী হিসেবে পরিচিত রিঙ্কু এবার সবাইকে চমকে দিতে তৈরি, দাবি বিজেপির। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের যাদবপুরে শেষ হাসি হাসবে কে? অপেক্ষা ২ মের।
Comments are closed.