ফের ট্যুইটযুদ্ধে তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র ও রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। এবার রাজ্যপালকে ‘আঙ্কল জি’ সম্বোধন করে তাঁর পেশাগত জীবন নিয়ে কটাক্ষ করলেন কৃষ্ণনগরের সাংসদ। শুধু মহুয়া নন, তৃণমূল নেতা দীনেশ ত্রিবেদীও নিশানা করলেন ধনখড়ের আইনজীবী পেশাকে। রাজ্যপালকে উদ্দেশ্য করে মহুয়া লিখলেন, আইনজীবী হিসেবে আপনার কেরিয়ার খুব একটা উজ্জ্বল ছিল না। অন্তত রাজ্যপাল হিসেবে রাজভবনের সম্মান রাখুন। আর প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা তৃণমূল সাংসদ দীনেশ ত্রিবেদীর কটাক্ষ, অমিত শাহের হাতের পুতুল হওয়ার আগে পর্যন্ত আইনের পেশায় উজ্জ্বল ছিলেন ধনখড়।
ঘটনার সূত্রপাত, রাজ্যপালকে কটাক্ষ করে মহুয়ার এক ট্যুইটে। তাতে গড়িয়া শ্মশানকাণ্ডে পচা দেহগুলি করোনার বলে দাবি করায় ধনখড়ের তীব্র সমালোচনা করে মহুয়া লিখেছিলেন, পচা আপেল গাছের নীচেই পড়ে। বেশি দূর যায় না। এর জবাব দিতে দেরি করেননি সোশ্যাল মিডিয়ায় সক্রিয় রাজ্যপাল ধনখড়। দিন কয়েক আগে ফেসবুকে এক ভিডিওতে মহুয়া মৈত্র যে পঞ্চায়েত স্তরে কাজ করার পদ্ধতি নিয়ে একাধিক প্রশ্ন তুলেছিলেন তাকেই হাতিয়ার করেন তিনি। শনিবার সকালে রাজ্যপাল সেই ট্যুইটে দাবি করেন, পঞ্চায়েতের কাজের প্রকাশ্যে সমালোচনা করে মমতার হাতে জব্দ হতে চলেছেন বুঝে এখন রাজ্যপালের সমালোচনা করে ভারসাম্য রক্ষার চেষ্টা করছেন মহুয়া।
সেদিন দুপুরেই এর কড়া জবাব দেন মহুয়া। রাজ্যপালকে ‘আঙ্কল জি’ বলে সম্বোধন করে ট্যুইটারে তিনটি পয়েন্ট তুলে আক্রমণ শানান তৃণমূল সাংসদ। তিনি লেখেন, যার হাতে যত রক্ত আছে বিজেপিতে তার উত্থান তত তাড়াতাড়ি হয়। তৃণমূলে উত্থান হয় কাজের ভিত্তিতে। তার পরের পয়েন্টে ধনখড়কে তীব্র কটাক্ষ করে লেখেন, আইনজীবী হিসেবে আপনার কেরিয়ার খুব উজ্জ্বল ছিল না। অন্তত রাজ্যপাল হিসাবে রাজভবনের সম্মান রাখুন। তিনি আরও লেখেন, আপনি (রাজ্যপাল) যে কোনও সময় রাজস্থান থেকে ভোটে লড়তে পারেন। সেজন্য নিজেকে সুস্থ রাখুন।
এদিকে তৃণমূল সাংসদ দীনেশ ত্রিবেদী বনাম রাজ্যপাল ধনকড়ের ট্যুইট-যুদ্ধও অন্য মাত্রা নিয়েছে। গড়িয়া শ্মশান কাণ্ডে ফেক নিউজ ছড়াচ্ছেন রাজ্যপাল, দীনেশ এমন দাবি করার প্রেক্ষিতে ধনখড় পরপর ট্যুইটে দীনেশ ত্রিবেদীর সমালোচনা করে জানান, ২০১৬ সালে সেরা সাংসদের পুরস্কারে ভূষিত হওয়া দীনেশের কাছে এমন বক্তব্য তিনি আশা করেন না।
যার প্রেক্ষিতে রবিবার দীনেশ ত্রিবেদী লেখেন, অমিত শাহের হাতের পুতুল কিংবা অমিত মালব্যের বলে দেওয়া বক্তব্য ট্যুইট করার আগে ধনখড়ও আইনজীবী হিসেবে বেশ উজ্জ্বল ছিলেন। দীনেশের আরও কটাক্ষ, এখনও এসব থেকে নিজেকে সরিয়ে নেওয়ার সময় আছে ধনখড়ের।
পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপালের দায়িত্বে আসার পর থেকেই ধনখড় বনাম রাজ্যের শাসক দলের দ্বৈরথ অব্যাহত। নিয়মিত ট্যুইটে রাজ্য সরকারকে আক্রমণ করেন রাজ্যপাল। প্রকাশ্যে সরকারের সমালোচনায় মুখর হন তিনি। অন্যদিকে তৃণমূলের দাবি, রাজ্যপালের মর্যাদা ক্ষুণ্ণ করছেন ধনখড়। সাংবিধানিক পদে থেকে নিজেকে বিজেপির মুখপাত্র হিসেবে পেশ করেছেন তিনি, অভিযোগ তৃণমূলের।
Comments are closed.