দিল্লি পুলিশকে কড়া ভাষায় বিঁধলেন তিসহাজারি আদালতের অতিরিক্ত দায়রা বিচারক কামিনী লাও। দিল্লির জামা মসজিদে নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখাতে গিয়ে ২১ ডিসেম্বর গ্রেফতার হন দলিত নেতা চন্দ্রশেখর আজাদ ওরফে রাবণ। মঙ্গলবার তাঁর জামিনের আবেদনের শুনানিতে বিচারক লাও দিল্লি পুলিশকে জানিয়ে দিলেন, প্রতিবাদ করাটা সাংবিধানিক অধিকারের মধ্যে পড়ে। তিনি দিল্লি পুলিশের আইনজীবীকে আরও স্মরণ করিয়ে দেন, সুপ্রিম কোর্ট কিন্তু পরিষ্কার বলে দিয়েছে, বারবার ১৪৪ ধারা জারি করা ক্ষমতার অপব্যবহার। বিচারক আইনজীবীকে বলেন, এটা মাথায় রাখবেন।
সিএএ, এনআরসি-র বিরুদ্ধে সারা দেশে তীব্র আন্দোলন হচ্ছে। তা রুখতে পুলিশ এবং প্রশাসন যখন যেখানে ইচ্ছা, ১৪৪ ধারা জারি করে দিচ্ছে। কাশ্মীরে তো ৩৭০ ধারা রদের পর থেকে এখনও অনেক এলাকায় ১৪৪ ধারা বলবৎ রয়েছে। গত সপ্তাহেই সুপ্রিম কোর্ট কাশ্মীর প্রসঙ্গে মন্তব্য করেছে, মত প্রকাশ, ক্ষোভ প্রকাশ কিংবা গণতান্ত্রিক অধিকার রুখতে বারবার ১৪৪ ধারা জারি করা যায় না। দিল্লি পুলিশের তরফে যুক্তি দেওয়া হয়, ধরনা, বিক্ষোভের জন্য অনুমতি নিতে লাগে। বিচারক প্রশ্ন তোলেন, কিসের অনুমতি? ধরনা বা বিক্ষোভ হলে সমস্যা কোথায়? প্রতিবাদ হলেই বা সমস্যা হবে কেন? আপনারা সংবিধান পড়েছেন? বিচারক আরও বলেন, সংসদে যে কথাগুলো বলা দরকার, তা বলা হয়নি বলেই মানুষ আজ রাস্তায় নেমেছে। বিচারকের প্রশ্নবাণে জর্জরিত দিল্লি পুলিশের আইনজীবী সোশ্যাল মিডিয়ায় আজাদের কিছু পোস্টের কথা উল্লেখ করে জানান, তিনি জামা মসজিদে বিক্ষোভ দেখানোর কথা বলেছেন। তা শুনে বিচারক লাও বলেন, এতে দোষের কী রয়েছে? আপনারা এমন ভাব করছেন যেন, জামা মসজিদ পাকিস্তানে। আরে, পাকিস্তানেও তো বিক্ষোভ, প্রতিবাদ করা যায়।
Comments are closed.