একের পর মামলায় ঐতিহাসিক রায়। বিচারপতি হিসেবে বাবা এবং দেশের তৎকালীন প্রধান বিচারপতি যশবন্ত বিষ্ণু চন্দ্রচূড়ের রায়ও পাল্টে দিয়েছিলেন তিনি। বুধবার দেশের ৫০ তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ নিলেন ধনঞ্জয় যশবন্ত চন্দ্রচূড়। এদিন রাষ্ট্রপতি দৌপদী মূর্মু তাঁকে শপথ বাক্য পাঠ করান। মাত্র ৭৪ দিন পদে থেকে মঙ্গলবারই সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির পদ থেকে অবসর নেন উমেশ উদয় ললিত।
অযোধ্যা জমি বিবাদ মামলা, নাগরিক গোপনীয়তা রক্ষার অধিকার, কাশ্মীরে ৩৭৭ ধারার আংশিক প্রত্যাহার, সমকামী সম্পর্ককে অপরাধমুক্ত সহ একাধিক ঐতিহাসিক মামলায় সাংবিধানিক বেঞ্চের অংশ ছিলেন ধনঞ্জয় যশবন্ত চন্দ্রচূড়। ২০১৬ সালের ১৩ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি হন জাস্টিস চন্দ্রচূড়। ২০২৪ সালের ১০ নভেম্বর পর্যন্ত দেশের প্রধান বিচারপতি পদে থাকবেন তিনি।
মুম্বাইয়ের সেন্ট স্টিফেন্স কলেজ থেকে অর্থিনীতি নিয়ে পড়াশোনা করেন। এরপর দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন নিয়ে পড়শোনা। আমেরিকার হার্ভাড ল স্কুল থেকে এলএলএম এবং ডক্টরেট করেন বিচারপতি চন্দ্রচূড়। অধ্যাপনার মধ্য দিয়ে পেশাগত জীবনের শুরু। ইউনিভার্সিটি অব মুম্বাইয়ে তুলনামূলক সাংবিধানিক আইনের অধ্যাপক ছিলেন তিনি। ১৯৯৮ সালে সিনিয়র এডভোকেট হিসেবে মুম্বাই হাইকোর্টে যান। এরপর অতিরিক্ত সিলিসিটর জেনারেল এবং পরে বিচারপতি হিসেবে নিযুক্ত হন।
বোম্বে হাইকোর্টের বিচারপতি এবং পরে এলাহাবাদ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি হয়েছিলেন ধনঞ্জয় যশবন্ত চন্দ্রচূড়। তাঁর মাধ্যমেই দেশ বাবা ও ছেলেকে প্রধান বিচারপতির আসনে পেল। ২০১৭ সালে নাগরিকদের গোপনীয়তা রক্ষার অধিকার মামলায় বিচারপতি চন্দ্রচূড়ের মন্তব্য ছিল, নাগরিকদের গোপনীয়তা রক্ষা একটি অপরিহার্য বিষয়। ওই মামলাতেই বাবার দেওয়া একটা রায়কে পাল্টে দেন তিনি। সমকামিতাকে অপরাধমুক্ত করা সংক্রান্ত একটি মামলায় বিচারপতি চন্দ্রচূড়ের মন্তব্য ছিল, একটি সামাজিক স্বীকৃতি পেতে ১৫০ বছরের লড়াইটা বড্ড বেশি সময়।
বিচারপতি চন্দ্রচূড় আপোষহীন মনোভাবের জন্য পরিচিত। দেশের নারীদের অধিকারের পক্ষেও একাধিকবার সওয়াল করেছেন তিনি। প্রধান বিচারপতি হিসেবে তাঁর নাম নিয়ে কদিন ধরেই জল্পনা চলছিল। আগামী দু’বছর সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির পদে থাকবেন ধনঞ্জয় যশবন্ত চন্দ্রচূড়।
Comments are closed.