আইনজীবী-পুলিশ বিরোধ নিয়ে কেন্দ্রকে দুষলেন কানহাইয়া কুমার, দু’পক্ষই এখনও চাপানউতোর চালিয়ে যাচ্ছে

দিল্লির তিসহাজারি আদালতের সামনে পার্কিং-কে কেন্দ্র করে আইনজীবী ও পুলিশ খণ্ডযুদ্ধ নিয়ে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকেই কটাক্ষ করলেন সিপিআই নেতা কানহাইয়া কুমার। ২০১৬ সালে জওহরলাল নেহরু ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসে দেশবিরোধী স্লোগান দেওয়ার অভিযোগে জেএনইউ-র তৎকালীন ছাত্রনেতা কানহাইয়া কুমারকে গ্রেফতার করে পুলিশ। দেশদ্রোহিতার মামলায় অভিযুক্ত কানহাইয়া দিল্লি হাইকোর্টে জামিনের আবেদন করতে যাওয়ার সময় আক্রান্ত হন একদল আইনজীবীর হাতে। তখন কানহাইয়ার অভিযোগ ছিল, পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করতে এগিয়ে আসেনি। গত ক’দিন ধরে রাজধানীর বুকে আইনজীবী ও পুলিশের বেনজির দ্বৈরথ নিয়ে কানহাইয়া বুধবার ট্যুইটারে লেখেন, ৩ বছর আগে যখন আদালত চত্বরে তাঁকে ও কয়েকজন সাংবাদিককে আইনজীবীরা নিগ্রহ করেন, তখন সরকারের তরফে আক্রমণকারী আইনজীবী ও পুলিশ প্রধান, দু’পক্ষকেই পুরস্কৃত করা হয়েছিল। তাঁর আরও মন্তব্য, তিসহাজারি আদালত চত্বরে যে ঘটনা ঘটেছে তার জন্য তিনি নির্দিষ্ট পেশার কাউকে দায়ী করছেন না। পুলিশ বা আইনজীবীর উর্দি পরা কিছু লোক গোলমাল পাকিয়েছে। তার জন্য সকলকে দায়ী করা ঠিক নয়। তিনি আরও লেখেন, সেদিনের মতো এদিনের দুই পক্ষের লড়াইও বিচারের জন্য।
বুধবার আরও একটি ট্যুইটে কানহাইয়া লেখেন, তাঁর ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা বলে, রাজনীতি দিয়ে সব পেশার অপরাধীকে রক্ষার চেষ্টা করা হয়। তাই কোনও নির্দিষ্ট পেশার বিরুদ্ধে নয়, অপরাধের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলতে হবে।
কয়েকদিন আগে দিল্লির তিসহাজারি আদালতের সামনে পার্কিং-কে কেন্দ্র করে আইনজীবী ও দিল্লি পুলিশের মধ্যে বিরোধের সূত্রপাত। সংঘর্ষে দু’পক্ষেরই বেশ কয়েকজন জখম হন। মার খাওয়ার প্রতিবাদে বিক্ষোভ শুরু করে দিল্লি পুলিশ। দিল্লি পুলিশের সদর দফতরের সামনে মঙ্গলবার দিনভর বিক্ষোভ চলে কয়েকহাজার পুলিশ কর্মী এবং তাঁদের পরিবারের লোকজনের। ওই বিক্ষোভে পুলিশের অনেক বড় কর্তাও সামিল হন। দিল্লির পুলিশ কমিশনার অমূল্য পট্টনায়েক বিক্ষোভের মঞ্চে ভাষণ দিতে গিয়ে পুলিশ কর্মীদের তোপের মুখে পড়েন। তাঁকে ‘গো ব্যাক’ স্লোগানও হজম করতে হয়। তড়িঘড়ি বক্তব্য শেষ করে তিনি অফিসে চলে যান। দীর্ঘ ১০ ঘণ্টা ধরে চলা পুলিশের ওই বিক্ষোভের ফলে বিজেপি সরকার রীতিমতো অস্বস্তিতে পড়ে। যদিও এখনও পর্যন্ত সরকারিভাবে বিজেপি নেতা বা কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা এই ইস্যুতে মুখ খোলেননি।
পুলিশ ও আইনজীবীদের স্নায়ুযুদ্ধ এখনও চলছে। দু’পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে শাস্তির দাবিতে অনড়। পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে বুধবার দিল্লির সমস্ত নিম্ন আদালত তালাবন্ধ করে বিক্ষোভ দেখান আইনজীবীরা। কোনও আদালতে কাজ হয়নি। বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টেও পুলিশের বিরুদ্ধে পিটিশন জমা দেন আইনজীবী জি এস মনি। এদিকে দিল্লি পুলিশও চুপচাপ বসে নেই। এরই মধ্যে কেরলের আইপিএস অ্যাসোসিয়েশন দিল্লি পুলিশের পাশে দাঁড়িয়েছে। গোটা বিষয়টি সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত চলে যাওয়ায় জল অনেক দূর গড়াবে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।

Comments are closed.