রাজ্য সরকারের উদ্যোগে গত ২০ ডিসেম্বর থেকে প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোডের তালতলা ময়দানে শুরু হয়েছে রাজ্য খাদি মেলা উৎসব। চলবে ৬ জানুয়ারি পর্যন্ত। গত চার বছরের মতো এবারও তালতলার খাদি মেলার (Khadi Mela) ক্রেতার ভিড় চোখে পড়ার মতো।
রাজ্য সরকারের লক্ষ্য এই খাদি মেলার মাধ্যমে নানাবিধ খাদি ও গ্রামীণ শিল্পকে প্রচারে আনা। এর ফলে একদিকে যেমন পিছিয়ে পড়া মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়ন হবে তেমনই খাদি শিল্পেরও প্রসার ঘটবে। সরকারের সেই লক্ষ্য অনেকটাই পূরণ হয়েছে। পাঁচ দিন ধরে যে বিক্রিবাটা হচ্ছে তাতে সন্তোষ প্রকাশ করছেন দোকানদার থেকে উদ্যোক্তারা।
মেলায় (Khadi Mela) খাদির পাঞ্জাবি, কুর্তা, শাড়ি ইত্যাদি বিক্রি করা এক দোকানদার জানালেন, এখনও পর্যন্ত প্রায় দুই লক্ষ টাকার জিনিস বিক্রি হয়েছে। চন্দন সরকার নামে ওই দোকানদার জানান, এই নিয়ে চার বছর তিনি তালতলা খাদি মেলায় স্টল দিয়েছেন প্রতি বছরই এখানে ভালো বিক্রি হয়। তবে এবার এখনও পর্যন্ত যা বিক্রি হয়েছে তাতে আশা করা যাচ্ছে অন্যান্য বছরের চেয়ে অনেক বেশি আয় হবে। সঞ্চিতা রায় নামে এক পোড়া মাটির গয়না, পাটের তৈরি নানারকম অ্যাকসেসরিজ বিক্রেতাও জানান, এ বারই সর্বাধিক বিক্রি হচ্ছে।
এই প্রসঙ্গে পশ্চিমবঙ্গ খাদি ও গ্রামীণ শিল্প পর্ষদের আধিকারিক বিশ্বজিৎ সরকার বলেন, এই জায়গায় (তালতলা ময়দান) প্রতিবার খাদিমেলায় ক্রেতার চাপ দারুণ থাকে। অন্যান্য জায়গার চেয়ে তাই এখানে স্টল দেওয়ার জন্য দোকানদাররাও প্রচণ্ড আগ্রহ প্রকাশ করেন। তিনি আশা করছেন, এবার মেলা থেকে আয় ৬ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে।
যাদবপুরের বাসিন্দা স্নিগ্ধা বসাক জানালেন, বাড়ি সাজানোর শৌখিন জিনিসের জন্য তিনি এই খাদিমেলার জন্য অপেক্ষা করে থাকেন তিনি। তাছাড়া তসরের শাড়ি, হালকা উলের গরম জামাও কিনেছেন তিনি। তবে একদিনে পুরোটা হয়নি, তাই আরও একদিন খাদি মেলায় ঢু্ঁ দিতেই হবে জানালেন বছর পঞ্চাশের স্নিগ্ধা দেবী।
২৪ ডিসেম্বর বাচিকশিল্পী শম্পা বটব্যালের আবৃত্তি, চিন্ময় আদকের ঝুমুর পারফরমেন্স এবং রীতি সম্প্রদায়ের আবৃত্তি ও সঙ্গীত অনুষ্ঠানে দারুণ জনাসমাগম হয়। ২৫, ২৮ এবং ২৯ ডিসেম্বরও বিভিন্ন শিল্পী ও শিল্পীগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান রয়েছে। চোখ ধাঁধানো জিনিস কেনা, অনুষ্ঠান আর দেদার খাওয়া-দাওয়ায় উৎসবের সপ্তাহে ভিড় উপচে পড়ছে তালতলার খাদি মেলা প্রাঙ্গণে।
Comments are closed.