খাগড়াগড় বিস্ফোরণে যুক্ত ছিলাম, আদালতে দোষ কবুল চার জামাত জঙ্গির

খাগড়াগড় বিস্ফোরণ মামলায় বিচারাধীন চার জামাত উল মুজাহাদিন বাংলাদেশ (জেএমবি) জঙ্গি আদালতে দোষ স্বীকার করল। সূত্রের খবর, এর ফলে রায় ঘোষণার জন্য আদালতের আর ৬২৯ সাক্ষীর সাক্ষ্যের প্রয়োজন হবে না। জানা গিয়েছে, যে চার জঙ্গি আদালতে বিচারকের কাছে দোষ কবুল করেছে, তারা হল মহম্মদ ইউনিস, মতিউর রহমান, জিয়াউল হক ও জাহিরুল শেখ। বর্তমানে সকলেই প্রেসিডেন্সি জেলে বন্দি।

খাগড়াগড় বিস্ফোরণ মামলায় অভিযুক্ত ৩৪ জনের মধ্যে ২ মহিলাসহ ২৬ জন জঙ্গি আগেই আদালতে দোষী সাব্যস্ত হয়ে সাজাপ্রাপ্ত হয়েছে। এখন জেল হেফাজতে থাকা বাকি সাত জঙ্গির মধ্যে চারজন কলকাতা নগর দায়রা এনআইএ বিশেষ আদালতে বিস্ফোরণ কাণ্ডে তাদের যুক্ত থাকার কথা কবুল করে নিয়েছে।

সম্প্রতি কলকাতা নগর দায়রার এনআইএ বিশেষ আদালতের বিচারক প্রসেনজিৎ বিশ্বাসের কাছে ওই চার জঙ্গি লিখিতভাবে তাদের দোষ কবুল করেছে।

আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই আবেদন কোর্টে জমা পড়ার পরই বিচারক প্রাথমিকভাবে অভিযুক্তদের কাছে জানতে চান, তারা সমস্ত কিছু জেনে বুঝে দোষ কবুল করছে কি না? চার জঙ্গি জানায়, তারা সমস্ত জেনেশুনেই আইনজীবী মারফত দোষ স্বীকার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আবেদনে তারা এও বলে, এই দোষের জন্য আদালত যা সাজা দেবে, তা তারা মাথা পেতে নেবে। এরপরই বিচারক ওই আবেদনের শুনানির দিন ধার্য করেন। সেপ্টেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহ নাগাদ এই মামলার শুনানির দিন ধার্য হয়েছে।

ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সির (এনআইএ) আইনজীবী শ্যামল ঘোষের কথায়, আমরা বিচার প্রক্রিয়া চালানোর জন্য সব রকমভাবে প্রস্তুত। কিন্তু অভিযুক্তরা যদি দোষ কবুল করে থাকে, সেক্ষেত্রে আমাদের করার কিছু নেই। এ বিষয়ে আদালতই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। এনআইএ সূত্রের খবর, এই চার জঙ্গির বিষয়ে আদালত রায় ঘোষণার পর আরও চার অভিযুক্তের বিরুদ্ধে বিচার প্রক্রিয়া বাকি থাকবে। তাদের তিনজন এখন জেল হেফাজতেই রয়েছে। সালাউদ্দিন সালেহান নামে এক অভিযুক্ত এখনও ফেরার। সেই হল জেএমবি’র আন্তর্জাতিক প্রধান। খাগড়াগড়ের মতোই বাংলাদেশের ঢাকার হোলি আর্টিজান কাফের হামলার ঘটনারও মূল চক্রী এই সালাউদ্দিন। তাকে বাদ দিয়ে মামলার চূড়ান্ত চার্জশিট আদালতে দাখিল করেছে এনআইএ। তদন্তকারী সংস্থার এক আধিকারিকের কথায়, সালেহান ধরা পড়লে তার বিরুদ্ধে ফের আদালতে সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট পেশ করা হবে। ২০১৪ সালের এই মামলার নিষ্পত্তিতে দীর্ঘ আইনি জটিলতা ছিল। সেসব কাটিয়ে এই মামলার শুনানি শুরুও হয়েছিল। বেশকিছু সাক্ষীর সাক্ষ্য শেষ হয়। কিন্তু তারপরই সাক্ষ্য চলাকালীন গ্রেফতার হয় বাকি অভিযুক্তরা। ফলে নতুন করে মামলার বিচার প্রক্রিয়া শুরু করতে গড়িয়ে যায় আরও কয়েক বছর। তার মধ্যে গত বছর এই মামলায় ২৬ জনকে দোষী সাব্যস্ত করে সাজা দেয় আদালত। পরবর্তী সময় শুরু হয় ফের শুনানি। কিন্তু তারই মধ্যে চার জঙ্গি আদালতে দোষ কবুল করায় এই মামলা নতুন মোড় নিল।

Comments are closed.