রাজ্যের কোন কোন প্রভাবশালী এবার সিবিআই টার্গেটে? এই প্রশ্নই সামনে উঠে এল বুধবার কলকাতা সহ রাজ্যের প্রায় ১২ টি জায়গায় টানা সিবিআই তল্লাশির জেরে। গরু পাচার কাণ্ডের তদন্তে এবার এনআইএ’র পাশাপাশি রাজ্যে তৎপরতা শুরু করল সিবিআই।
গরুপাচারের মামলায় এদিন রাজ্যজুড়ে ব্যাপক তল্লাশি শুরু করে সিবিআই। বিএসএফের কমান্ডান্ট পদমর্যাদার একাধিক অফিসারের বাড়ি এবং সরকারি বাসভবনে তল্লাশি শুরু করেন সিবিআইয়ের গোয়েন্দারা।
সিবিআই সূত্রে খবর, ২০১৮ সালে হিসাব বহির্ভূত নগদ প্রায় ৪৭ লাখ টাকাসহ গ্রেফতার করা হয়েছিল বিএসএফ কমান্ডান্ট জিবু ডি ম্যাথিউকে। তাঁকে জেরা করে জানা যায়, ওই বিপুল অঙ্কের টাকা তিনি পেয়েছিলেন মুর্শিদাবাদে কর্মরত অবস্থায়। সেখানে বাংলাদেশ সীমান্তে গরুপাচারে সহায়তা করার জন্য চোরাকারবারীরা ওই টাকা তাঁকে দিয়েছিল। ওই মামলায় কলকাতার একটি পাঁচতারা হোটেল থেকে মুর্শিদাবাদের ব্যবসায়ী জনৈক এনামূল হক ওরফে বিশুকে গ্রেফতার করে সিবিআই। তদন্তকারীদের দাবি, বিশুই এ রাজ্যে গরু পাচারের সব চেয়ে বড় সিন্ডিকেট চালাতেন।
পরবর্তী সময়ে এনামূল ওই মামলায় জামিন পেলেও, তার তদন্ত এখনও চালিয়ে যাচ্ছে সিবিআই। তদন্তকারীদের দাবি, জিবুর মতো আরও একাধিক সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর আধিকারিক রয়েছেন যাঁরা এই গরুপাচারের দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত।
সিবিআই আধিকারিকরা এ দিন সল্টলেকের বিজে ব্লকে বিএসএফের কমান্ডান্ট পদমর্যাদার আধিকারিক সতীশ কুমারের বাড়িতে হানা দেন। সূত্রের খবর, জিবুকে জেরা করেই সতীশ কুমারের নাম তাঁরা পেয়েছেন। সতীশ মালদহে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে কমান্ডান্ট পদে কাজ করেছেন কয়েক বছর আগে।
সতীশ ছাড়াও, এ দিন বেনিয়াপুকুরে এনামূল হকের বিলাসবহুল ফের ফ্ল্যাটে হানা দেন সিবিআই গোয়েন্দারা। সেখানে সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বেলা প্রায় ১ টা পর্যন্ত ছিলেন সিবিআই অফিসাররা। এ দিন সিবিআইয়ের তদন্তকারীরা মুর্শিদাবাদে লালগোলার কুলগাছিয়ায়এনামূলের গ্রামেও হানা দেন। রাজারহাট নিউটাউনে একটি ফ্ল্যাটেও হানা দেন গোয়েন্দারা। সব মিলিয়ে রাজ্যে প্রায় ১২ টি জায়গায় তল্লাশি চলে।
সিবিআই অফিসারদের ইঙ্গিত, এনামূলের এই চক্রের সঙ্গে রাজ্যের পদস্থ সরকারি কর্মী থেকে শুরু করে একাধিক প্রভাবশালী রাজনীতিবিদের যোগ রয়েছে। সেই যোগসূত্রে খোঁজার জন্যই এ দিনের তল্লাশি, বক্তব্য গোয়েন্দাদের। বিধানসভা নির্বাচনের আগে এই গরুপাচার তদন্তকে কেন্দ্র করে একাধিক রাজনৈতিক নেতা, সরকারি আমলাকে জিজ্ঞাসাবাদের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলে সিবিআই সূত্রে খবর।
Comments are closed.