লাদাখ সীমান্তে বেনজির সংঘর্ষে চিনা সেনার হাতে শহিদ হতে হল ভারতীয় জওয়ানদের। বুধবার সকাল পর্যন্ত পাওয়া খবর অনুযায়ী, ২০ জন ভারতীয় জওয়ান শহিদ হয়েছেন লাদাখ সীমান্তে। যার মধ্যে রয়েছেন বাংলার এক যোদ্ধাও। বীরভূমের বাসিন্দা বছর ২৬ এর ওই জওয়ানের নাম রাজেশ ওরাং। তাঁর মৃত্যুর খবরে শোকস্তব্ধ রাজেশের পরিবার।
বীরভূমের মহম্মদবাজার থানা এলাকার বেলগড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা রাজেশ ছ’বছর আগে সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। অভাবের সঙ্গে লড়াই করেই সেনাবাহিনীতে চাকরি পেয়েছিলেন তিনি। জানা গিয়েছে, তিনিই ছিলেন পরিবারের একমাত্র রোজগেরে সদস্য। মহম্মদ বাজারের মালাডাং হাই স্কুলের ছাত্র ছিলেন তিনি। উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করার পর সিউড়ির বিদ্যাসাগর কলেজে ভর্তি হয়েছিলেন। কিন্তু ডিগ্রি পাশ করার আগেই সেনাবাহিনীর চাকরিতে যোগ দেন ওই তরুণ। বাবা শারীরিক অসুস্থতার জন্য কাজ করতে পারেন না। কিছুদিনের মধ্যেই বোনের বিয়ে ছিল। তাই রাজেশের উপার্জনের উপরই নির্ভর করে থাকতে হত গোটা পরিবারকে। তাঁর আচমকা মৃত্যুতে অকুল পাথারে গোটা পরিবার।
২০১৫ সালে ভারতীয় সেনা বিভাগে যোগ দেন রাজেশ। প্রথমে তিনি ১৬ বিহার রেজিমেন্টে পোস্টেড ছিলেন। তারপর থেকে লাদাখেই পোস্টিং ছিল তাঁর।
সেনা বাহিনী সূত্রে খবর, চিনের সেনাদের সঙ্গে সংঘর্ষে আহত হওয়ার পর রাজেশকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু বাকি ১৯ জন জওয়ানের মত জীবন যুদ্ধে হার মানে সে। মঙ্গলবার সন্ধ্যে নাগাদ তাঁর মৃত্যু হয়। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, গত মে মাসেই তাঁর বাড়ি ফেরার কথা ছিল। কিন্তু লকডাউন কার্যকর হওয়ার ফলে তাঁর আর বাড়ি ফেরা হল না।
গ্রামের বাসিন্দারাও বিশ্বাস করতে পারছেন না রাজেশ আর নেই। মাস আটেক আগে শেষবার বাড়ি ফিরেছিলেন তিনি। কিছুদিন ধরে তাঁর বিয়ের সম্বন্ধ দেখা চলছিল। কিন্তু আর্মি অফিস থেকে আসা এক ফোনেই সব শেষ। রাজেশের বোন শকুক্তলা ওরাংয়ের প্রতিক্রিয়া, দাদা ও অন্যান্য জওয়ানদের মৃত্যুর যোগ্য জবাব দিক ভারত।
Comments are closed.