ধনতেরাস এর দিনটির কথা সবাই জানেন। প্রতি বছর কার্তিক মাসের কৃষ্ণ পক্ষের ত্রয়োদশীতে ধনতেরাস পালন করা হয়। এই ধনতেরাসের জন্য সকলেই আগে থেকে প্রস্তুতি নিয়ে রাখেন। আগে ভাগে প্রস্তুতি নিতে শুরু করে দেন। দিওয়ালির একদিন আগে এই দিন আসে। আজকের দিনে ধন দেবীর পুজো করা হয় লাভের আশায়। এমন দিনে সোনা রূপা কেনাকে শুভ বলে মনে করা হয়।
ধনতেরাস এর পুজো করার সবচেয়ে শুভ সময় হলো সন্ধ্যে বেলা। এই বছরে ১৩ নভেম্বর এই দিন পড়েছে। সময় ৫ টা ২৪ মিনিট থেকে ৫ টা ৫৯মিনিট হলো সবচেয়ে আদর্শ সময় ধন দেবীর উপাসনা করার।
এই ধনতেরাস কে ঘিরে অনেক রকম গল্প আছে। আছে অনেক কাহিনী। ধন দেবী ও কুবেরের আরাধনা করা হয় এদিন। বিস্তর গল্প প্রচলিত আছে এর পেছনে। তার মধ্যে একটি গল্প হল সমুদ্রমন্থনের সময় ধন দেবী উঠে এসেছিলেন মন্থন সময়। সেই জন্য এই দিনটিকে ধনতেরাস বলে পালন করা হয়। আরো একটি কাহানি হল, রাজা হিমের ছেলের বিয়ের চতুর্থ দিনে নববধূ যমের হাত থেকে ছেলেকে বাঁচাতে প্রচুর সোনাদানা রুপা প্রভৃতি ডাই করে দরজার সামনে রেখে দেন। এতকিছুর জৌলুসে চোখ ধাঁধিয়ে যায় যমের এবং সে যাত্রায় রাজা হিমের ছেলের মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা পায় ।তারপর থেকেই এই দিনটিকে পালন করা শুরু হয়।
এখানেই শেষ হয়না কাহিনী ৷ ধনতেরাসকে নিয়ে আরও একটি গল্প রয়েছে৷ সেটা হল, একসময় দুর্বাশা মুনির অভিশাপে স্বর্গ হয় লক্ষ্মীহীন। এরপর রাক্ষস দের সঙ্গে লড়াই করে ধনতেরাসের দিনই লক্ষ্মী দেবীকে ফিরে পান দেবতারা। এই কারণে শ্রী লক্ষ্মীর আরাধনার মাধ্যমে এরপর দিওয়ালি সূচনা হয় এবং এই দিনটিকে ধনতেরাস বলে পালন করা হয়।
তবে বাঙালি এর আগে কখনোই ধনতেরাস উৎসব পালন করেনি ।অবাঙালিদের ধন ত্রয়োদশী উৎসবকে কেন্দ্র করে এই দিনটি পালন করা হতো আগে। তবে বেহিসেবি বাঙালি এখন সঞ্চয়ী হতে শিখেছে, তাই বারো মাসে তেরো পার্বণ এর মধ্যে ধনতেরাস ও একটি পার্বণ বলে এখন পরিচিত। এইদিনে সোনারূপা ধাতু কিনে রাখেন, বাড়ির শুভকামনায় এই কাজ করা হয়। মনে করা হয় এইদিন সোনা রুপা কিনলে তার দ্বিগুণ হয়ে ঘরে ফিরে আসে। সমস্ত অশুভ শক্তির বিনাশ এবং লক্ষ্মীলাভের আশায় এই ধনতেরাস উৎসব বাঙালি এখন বেশ জাঁকজমকভাবেই পালন করে।
Comments are closed.