ফের চাপে পড়ল ম্যাগি প্রস্তুতকারক সংস্থা ‘নেসলে’। ম্যাগিতে বিপজ্জনক মাত্রায় ভারী ধাতু সীসা বা লেড থাকার অভিযোগে ক্রেতা সুরক্ষা দফতর সুপ্রিম কোর্টে মামলা করছিল। বৃহস্পতিবার, ক্রেতা সুরক্ষা দফতরের দায়ের করা ওই মামলার ওপর থেকে স্থগিতাদেশ তুলে নিল সুপ্রিম কোর্ট।
সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি জানতে চান, ম্যাগিতে সীসা রয়েছে কী না। এর উত্তরে কোম্পানির তরফের আইনজীবী বলেন, ম্যাগিতে সীসা ছিল, এ কথা সত্য। তবে তা নিরাপদ মাত্রায় ব্যবহার করেছিল ‘নেসলে’। এরপর মামলা থেকে স্থগিতাদেশ তোলার নির্দেশ দেন বিচারপতি। পালটা প্রশ্ন করেন, সীসা থাকলে তা খাবে কেন?
ক্রেতা সুরক্ষা তরফে অভিযোগ করা হয়, ম্যাগিতে মাত্রাতিরিক্ত সীসা এবং ক্ষতিকর মনোসোডিয়াম গ্লুকামেট ব্যবহার করা হতো। তা সত্ত্বেও ম্যাগিকে সুস্বাদু এবং স্বাস্থ্যকর নুডুলস দাবি করে ব্যবসা করত ‘নেসলে’। ম্যাগিকে স্বাস্থ্যকর খাবার বলে প্যাকেটে ভুল বার্তা লেখা ও অনৈতিক উপায়ে ব্যবসা করার অভিযোগে কেন্দ্রীয় মন্ত্রকের তরফে, কনজিউমার প্রোটেকশন অ্যাক্টের আওতায় ম্যাগি কোম্পানিকে ৬৪০ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে যায় ‘নেসলে’।
বৃহস্পতিবার, বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চে প্রশ্ন তোলা হয়, ম্যাগিতে যদি ক্ষতিকর ধাতু থাকে, তবে কেন মানুষ তা খাবে? এর উত্তরে নেসলের পক্ষের আইনজীবী জানান, অনেক খাবারেই নিরাপদ মাত্রায় সীসা ব্যবহার করা হয়। এরপর, আদালত ন্যাশনাল কনজিউমার রিড্রেসাল কমিশনকে ম্যাগির গুণগত মান পরীক্ষা করার নির্দেশ দেন।
প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালে ম্যাগিতে ক্ষতিকর সীসা ও মনোসোডিয়াম গ্লুকামেটের উপস্থিতি পেয়ে ম্যাগি প্রস্তুতকারক কোম্পানির বিরুদ্ধে ক্রেতা সুরক্ষা আইন ভঙ্গের অভিযোগ ওঠে। ভারতীয় খাদ্য সুরক্ষা নিয়ন্ত্রক সংস্থা তাদের রিপোর্টে দাবি করে, ম্যাগিতে অতিরিক্ত মাত্রায় ক্ষতিকর ধাতু রয়েছে। ম্যাগি প্রস্তুতকারক কোম্পানি ‘নেসলে’র বিরুদ্ধে জাতীয় ক্রেতা সুরক্ষা কমিশনে মামলা দায়ের করেছিল কেন্দ্রীয় সরকার। ভারতীয় বাজার থেকে ম্যাগিকে সরিয়ে নিয়েছিল ‘নেসলে’। পরে সুরক্ষা কমিশনে মামালার ওপর শীর্ষ আদালতের নিষেধাজ্ঞা পায় তারা। আবার বাজারে আসে জনপ্রিয় এই নুডলস।
কিন্তু, বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট সেই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ায় ম্যাগি প্রস্তুতকারক কোম্পানির বিরুদ্ধে মামলা শুরুর সম্ভাবনা উঠছে। প্রশ্ন উঠল ম্যাগির খাদ্যগুণ নিয়েও।
Comments are closed.