উত্তর প্রদেশ, গুজরাত, মধ্য প্রদেশ, রাজস্থান, বিহার এবং ঝাড়খণ্ডে শিশুরা ভুগছে মারাত্মক অপুষ্টিতে, সমীক্ষায় প্রকাশ

ভয়াবহ অপুষ্টিতে ভুগছে ভারতের আগামী প্রজন্ম। সম্প্রতি হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সমীক্ষায় উঠে এসেছে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য। হার্ভার্ডের ভূগোল ও জনস্বাস্থ্যের অধ্যাপক এস ভি সুব্রহ্মণ্যমের করা সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে, উত্তর প্রদেশ, রাজস্থান, মধ্য প্রদেশ, বিহার, ঝাড়খণ্ড এবং গুজরাতে শিশুরা ভয়াবহ অপুষ্টির শিকার। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে দেশের ভবিষ্যৎ নিয়েই উঠতে পারে গুরুতর প্রশ্ন, মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা।
এতদিন ভারতে যে সমস্ত সমীক্ষা হয়েছে তা জেলা কিংবা রাজ্য ভিত্তিক। এবার অধ্যাপক এস ভি সুব্রহ্মণ্যমের নেতৃত্বে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় সমীক্ষা চালিয়েছে ভারতের প্রতিটি লোকসভা কেন্দ্র ধরে। ভারতের সংসদীয় কেন্দ্রগুলোতে শিশুদের স্বাস্থ্যের অবস্থা শীর্ষক সমীক্ষায় দেখানো হয়েছে, সরকারি উদ্যোগ সত্ত্বেও কীভাবে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে অপুষ্টি ভয়াবহ আকার ধারণ করছে।
সমীক্ষা বলছে, উত্তর প্রদেশের বাহারাইচ লোকসভা কেন্দ্রে শিশুদের বৃদ্ধি সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত। সেখানে জন্ম নেওয়া শিশুদের ৬৪ শতাংশ ক্ষেত্রেই বৃদ্ধি রুদ্ধ হওয়ার ঘটনা লক্ষ্য করা যায় বলে সমীক্ষায় প্রকাশ। যে ২০ টি লোকসভা কেন্দ্রে এই সমস্যা ভয়াবহ আকার ধারন করেছে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য বিহারের নালন্দা, সীতামারি, হাজিপুর। উত্তর প্রদেশের বাহারাইচ, সরস্বতী, কাইসারগঞ্জ এবং গুজরাতের ঔরঙ্গাবাদ। যে ২০ টি লোকসভা কেন্দ্রে এই সমস্যা সবচেয়ে কম সেগুলোর বেশিরভাগই কেরলে বলে সমীক্ষায় উল্লেখ করা হয়েছে।
এরপর আন্ডার ওয়েট বা কম ওজনের সমস্যা। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে, ঝাড়খণ্ডের সিংভূম লোকসভা কেন্দ্রে শিশুদের মধ্যে কম ওজনের সমস্যা সবচেয়ে ভয়াবহ আকার নিয়েছে। সমীক্ষায় প্রকাশ এই লোকসভা কেন্দ্রে শতকরা ৬১ জন শিশু এই সমস্যায় ভোগে। এই সমস্যায় জর্জরিত প্রথম ২০টি লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে রয়েছে ঝাড়খণ্ডেরই খুন্টি, উত্তর প্রদেশের শাজাহানপুর, জোনপুর, পশ্চিমবঙ্গের পুরুলিয়া এবং মধ্য প্রদেশের মোরেনা। শিশুদের মধ্যে কম ওজনের পরিমাণ সবচেয়ে কম এমন ২০ টি লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে বেশিরভাগই কেরলে। এই তালিকায় রয়েছে জম্মু-কাশ্মীরের অনন্তনাগ লোকসভা কেন্দ্রও।
এবার শিশুর শারীরিক এবং মানসিক ক্ষয়। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক সমীক্ষা বলেছে, ঝাড়খণ্ডের জামশেদপুরে জন্ম গ্রহণ করা ৪০ শতাংশ শিশুই ক্ষয়ের শিকার। জামশেদপুরে এই সংখ্যাটা শতকরা ৪০ শতাংশ। ক্ষয়ের পরিমাণ সবচেয়ে কম মণিপুরে (৬ শতাংশ)।
হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক সমীক্ষা রিপোর্টে এর পরের সারণি অ্যানিমিয়া। দেখা যাচ্ছে, দাদরা ও নগর হাভেলিতে অ্যানিমিয়া আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা সর্বাধিক। দাদরা ও নগর হাভেলির ৮৪ শতাংশ শিশু অ্যানিমিক। অ্যানিমিয়া আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা সবচেয়ে কম কেরলের কোল্লাম লোকসভা কেন্দ্রে। সেখানে মাত্র ১৮ শতাংশ সদ্যোজাত অ্যানিমিক। অ্যানিমিক শিশুর সংখ্যায় প্রথম ২০ টি স্থান অধিকার করে আছে উত্তর প্রদেশ, রাজস্থান, মধ্য প্রদেশ, গুজরাত এবং ঝাড়খণ্ডের বিভিন্ন লোকসভা কেন্দ্র।

Comments are closed.