সমাজকে বিভাজিত করছে পদবি। তাই কারও নামই যথেষ্ট, পদবিতে তিনি গুরুত্ব দিতে চান না বলে জানালেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রায় প্রতিদিনই সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন প্রত্যাহারের দাবিতে তৃণমূলের ছাত্রশাখার পরিচালিত ধরনা মঞ্চে উপস্থিত হচ্ছেন তৃণমূল নেত্রী।
বৃহস্পতিবার রানি রাসমনি রোডের ধরনা মঞ্চ থেকে মমতা বলেন, তাঁর ভাইপো সাংসদ অভিষেক ব্যানার্জির স্ত্রীর নামটুকুই তিনি জানেন। তাঁর পদবি জানা নেই। মমতার কথায়, অভিষেকের স্ত্রী পাঞ্জাবি, এটুকুই জানি। ওর টাইটেল জানতে চাইনি কখনও। এমনকী মুখ্যমন্ত্রী তাঁর গাড়ির চালকেরও পদবি জানেন না বলে দাবি করেন। কোনও প্রশাসনিক আধিকারিকেরও টাইটেল নিয়ে তিনি মাথা ঘামাননি। বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে পদবি পরিচিতি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্য বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
বৃহস্পতিবার ধরনা মঞ্চের সপ্তম দিনে মমতা বলেন, জাতি ও ধর্মের ভিত্তিতে বিভাজন চলবে না এ দেশে। দেশটা সবার। তিনি বলেন, নবান্ন, তৃণমূল ভবন এবং তাঁর বাড়িতে মাছের অ্যাকোয়ারিয়াম আছে। তাঁর প্রশ্ন, শতাধিক মাছ রয়েছে, তাদের কী টাইটেল তা কি কেউ জানে? সমাজও এমনই। সেখানেও সবাই একসঙ্গে থাকে। সবাইকে নিয়েই চলতে হবে। সবাইকে ভালোবাসতে হবে। তাই মানুষই প্রধান, পদবি নয়। মমতা বলেন, সেই জায়গা থেকে সরে এলেই আমি দুঃখ পাই।
কেন্দ্রের বিজেপি সরকার সমাজকে ধর্মের নামে বিভাজিত করার লক্ষ্যে এনেছে নয়া নাগরিকত্ব আইন। ধর্মতলার ঘরনা মঞ্চ থেকে মমতার অভিযোগ, ভারতের ধর্মনিরপেক্ষতার আদর্শ ধ্বংস করতেই এই আইন এনেছে বিজেপি। বৃহস্পতিবার রানি রাসমনি রোডের ধরনা মঞ্চ থেকে জাতপাত, ধর্মের ভেদাভেদের ঊর্ধ্বে উঠে সামাজিক ঐক্যের কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী।
নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন ও এনআরসি বিরোধী আন্দোলন নিয়ে যখন রাজ্যের সর্বত্রই আন্দোলনের জোয়ার উঠেছে, এ সবের মধ্যেও গঙ্গাসাগর মেলা নির্বিঘ্নে শেষ হয়েছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এবার ৫৫ লক্ষ মানুষ এসেছিলেন। অথচ একটাও অঘটন হয়নি। দেশের আর কোথাও এত সুষ্ঠুভাবে সরকারি খরচে মেলা হয় না বলে দাবি মমতার।
Comments are closed.