বারাকপুরের সিপিকে খুনের চেষ্টা হয়েছে, পুলিশ আছে তাই শান্তিতে আছেন, নাম না করে দিলীপ ঘোষকে আক্রমণ মুখ্যমন্ত্রীর
পুলিশ আছে বলেই শান্তিতে চলাফেরা করছেন, চায়ের দোকানে খাচ্ছেন। বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের কড়া সমালোচনা করে মন্তব্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির। মঙ্গলবার পুলিশ দিবস উপলক্ষ্যে নবান্নের অনুষ্ঠান থেকে নাম না করে বঙ্গ বিজেপির সভাপতিকে একহাত নেন মমতা। তিনি বলেন, পুলিশকে আক্রমণ করে, তাঁদের বিরুদ্ধে কুৎসা ছড়িয়ে এবার তাঁদের পরিবারকে শাসাচ্ছেন বিরোধীরা। যে পুলিশ অফিসার ও কর্মীরা করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রাণ পর্যন্ত দিচ্ছেন তাঁদের আক্রমণ করা হচ্ছে। ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মাকে খুনের চেষ্টা করা হয়েছে। মমতার কথায়, পুলিশের পরিবার কী করল, যে তাঁদের বলছেন ছেলে বউয়ের মুখ দেখা বন্ধ করে দেব, ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা বন্ধ করে দেব? এত সাহস! এরপরই মমতার পাল্টা হুঁশিয়ারি, ‘গায়ে হাত দিয়ে দেখান।’
রবিবার সোদপুরের এক চা চক্রের অনুষ্ঠানে পুলিশ প্রশাসনকে বেনজির আক্রমণ করেন দিলীপ ঘোষ। বলেন, তৃণমূল নেতাদের চামচাগিরি করছে পুলিশ, বিজেপি কর্মীদের মিথ্যে অভিযোগে ফাঁসানো হচ্ছে। এরপরেই দিলীপের হুঁশিয়ারি ছিল, পুলিশের আনন্দ বেশিদিন টিকবে না। তাঁর কথায়, এক বছর পরে বউবাচ্চার মুখ দেখতে দেব না। যারা দু’নম্বরি পয়সায় ছেলেদের বেঙ্গালুরুতে ভর্তি করেছেন। তাদের পড়াশোনা শেষ হবে না। পুলিশের ছেলেমেয়ে ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার হবে না। তাদের পরিযায়ী শ্রমিক করে ছাড়ব।
এই মন্তব্য নিয়ে রাজনৈতিক মহলে তীব্র সমালোচনা হলেও থামেননি দিলীপ। তিনি ফের সোমবার মন্তব্য করেন রাজ্য সরকার হিংসাকেই নীতি হিসাবে মেনে নিয়েছে। পুলিশ এখানে নির্বিকার।
এর পাল্টা হিসেবে মুখ্যমন্ত্রী তথা রাজ্যের পুলিশমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি এদিন মুখ খোলেন। তাঁর অভিযোগ গত নয় বছরে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ থেকে দুর্যোগ মোকাবিলা, দেশের সেরা কাজ করছে কলকাতা ও পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ। তাঁদের কাজের একবারও প্রশংসা না করে আক্রমণ করছে বিরোধীরা। এখন আবার ব্যক্তিগত হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এ বিষয়ে বলতে গিয়ে মমতার কথায়, কলকাতার প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারের বিরুদ্ধে তদন্তে নেমে তাঁর বৃদ্ধা মাকে ভয় দেখিয়ে এসেছিলেন। কিন্তু ভয় দেখিয়ে লাভ নেই। পাশাপাশি পুলিশ দিবস উপলক্ষ্যে সমস্ত পুলিশ অফিসার ও কর্মীকে মুখ্যমন্ত্রীর পরামর্শ, এসব শাসানি বীরের মতো গ্রহণ করুন। একে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিন।
কোভিড মোকাবিলায় কলকাতা ও রাজ্য পুলিশের কাজের প্রশংসা করে ১ সেপ্টেম্বর দিনটিকে পুলিশ দিবস হিসেবে ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির মৃত্যুর কারণে সেই অনুষ্ঠান পিছিয়ে দেওয়া হয়। এদিন করোনায় মারা যাওয়া ২০ জন পুলিশ অফিসার, কর্মী ও সরকারি আধিকারিকের পরিবারের একজন সদস্যকে চাকরির নিয়োগপত্র তুলে দেওয়া হয়। এছাড়া করোনা যোদ্ধাদের সম্মান জানিয়ে মেডেল দেওয়া হয়। লালবাজারে নতুন বিল্ডিং থেকে নতুন থানার ভার্চুয়াল উদ্বোধন সহ একাধিক প্রকল্পের সূচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী।
Comments are closed.