বাংলায় হেরে গেছেন বলে আপনারা আমাকে এভাবে অপমান করতে পারেন না। আপনারা সর্বশক্তি দিয়ে চেষ্টা করেছিলেন কিন্তু পারেননি। তাই বলে আমার সঙ্গে রোজ এভাবে ঝগড়া করবেন?
শনিবার নবান্নের সাংবাদিক বৈঠকে বললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। এদিন মোটেও আগমার্কা আক্রমণাত্মক মেজাজে ছিলেন না মমতা। বরং নরেন্দ্র মোদীকে উদ্দেশ্য করে বলতে গিয়ে তাঁর ছত্রে ছত্রে ঝরে পড়েছে শ্লেষ।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর দফতরের নির্দেশেই সংবাদ মাধ্যমের একাংশ ক্রমাগত মিথ্যে খবর প্রচার করে আমাদের ভাবমূর্তি নষ্ট করার চেষ্টা করছে। মুখ্যমন্ত্রী জানান, দুর্গত এলাকা পরিদর্শনে আমার সফর সূচি ঘোষণার পরে প্রধানমন্ত্রীর সূচি ঘোষিত হয়। আমি তাও ওঁর সঙ্গে দেখা করতে যাই, রাজ্যের ক্ষয়ক্ষতির বিস্তারিত রিপোর্ট ওঁর কাছে জমা দিয়েছি। মুখ্যমন্ত্রী দাবি, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার জন্য আমাদের অনেকক্ষণ অপেক্ষা করানো হয়।
শুক্রবারের ঘটনা নিয়ে বলতে গিয়ে মমতা বলেন, আমরা যখন সাগরদ্বীপে প্রশাসনিক বৈঠক করছি, প্রধানমন্ত্রীর দফতরকে জানাই ওঁর সঙ্গে আমরা দেখা করতে চাই। সম্মতি দেওয়া হয়। তারপর প্রধানমন্ত্রীর অফিস থেকে বলা হয় আমরা যেন ২০ মিনিট অপেক্ষা করি। আমরা অপেক্ষা করার পর কলাইকুন্ডায় যাই। সেখানেও আমাদের অপেক্ষা করতে বলেন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে থাকা আধিকারিকরা। শেষে আমরা ওঁর সঙ্গে দেখা করে রাজ্যের ক্ষয়ক্ষতির একটি বিস্তারিত রিপোর্ট জমা দিয়ে, প্রধানমন্ত্রীর অনুমতি নিয়েই বেরিয়ে আসি। আমি তিনবার ওঁকে জিজ্ঞেস করেছি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনার অনুমতি নিয়ে আমি কি আসতে পারি?
পাশাপাশি মমতা আরও বলেন, আগে ঠিক হয়েছিল শুধুমাত্র প্রধানমন্ত্রী মুখ্যমন্ত্রী বৈঠক হবে। কিন্তু পরে জানতে পারি ওই বৈঠকে রাজ্যপাল থাকছেন, বিরোধী দলনেতা সহ দুই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী থাকবেন। মমতার দাবি, একটা প্রশাসনিক বৈঠক নিয়ে বিজেপি রাজনীতি করছে। ইচ্ছে করে ফাঁকা চেয়ারের ছবি দেখিয়ে তাঁর সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে চাইছে বিজেপি।
বৈঠকে শুভেন্দু অধিকারীর হাজির থাকা প্রসঙ্গে মোদীকে মমতার তোপ, আপনি যদি বিরোধীদের মতামতকে এতই গুরুত্ব দেবেন তাহলে দিল্লিতে বিরোধীদের কথা শোনা হয় না কেন? তিনি আরও বলেন, কয়েকদিন আগে প্রধানমন্ত্রী নিজের রাজ্য গুজরাটে গিয়েছিলেন সেখানেও কেন বিরোধী দল নেতাকে ডাকা হল না।
গতকাল কলাইকুন্ডায় প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকে উপস্থিত না থাকা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণ করে ট্যুইট করেন একাধিক বিজেপি নেতা, মন্ত্রী। রাজ্যপালও কার্যত বিজেপি নেতাদের সুরেই মমতার সমালোচনা করেন। বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্বের বক্তব্য, বাংলার উন্নতির থেকেও মুখ্যমন্ত্রীর দম্ভ বেশি গুরুত্বপূর্ণ, তাই প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকে উনি যাননি। এদিন তারই জবাব দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি।
Comments are closed.