গায়ের জোরে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন দেশজুড়ে চালু করে দিলেও তা কাগজ-কলমেই থেকে যাবে। এ রাজ্যে কোনওভাবেই নাগরিকত্ব আইন, এনআরসি ও এনপিআর লাগু হবে না। রাজভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক সেরে রানি রাসমণি রোডে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সিএএ এবং এনআরসি বিরোধী অবস্থান মঞ্চ থেকে ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। তিনি বলেন, আপনারা আইন করেছেন, আমরা কেটে দিয়েছি। ভাষণ শেষে ব্ল্যাকবোর্ডে এনআরসি, সিএএ ও এনপিইআর লিখে তা চক খড়ি দিয়ে কেটে দিয়ে কেন্দ্রীয় আইন ও নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানান মমতা। তিনি জানান, রাজভবনে প্রধানমন্ত্রীকে বলে এসেছি, সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন, এনআরসি ও এনপিআর আমরা মানছি না। আন্দোলন জারি থাকবে। মমতা যখন এই ভাষণ দিচ্ছেন, তখন নরেন্দ্র মোদী অদূরেই কারেন্সি বিল্ডিং-এর অনুষ্ঠানের পথে রওয়ানা হচ্ছেন রাজভবন থেকে।
সেই সঙ্গে স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিন উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর বেলুড় সফরকেও নাম না করে কটাক্ষ করেন তৃণমূল নেত্রী। তিনি বলেন, কেউ কেউ দিল্লি থেকে একদিন এসে এই দিনকে ‘গ্লোরিফাই’ করার চেষ্টা করেন। কিন্তু বাংলার মানুষ ৩৬৫ দিন স্বামী বিবেকানন্দকে স্মরণে রাখেন। প্রসঙ্গত, প্রধানমন্ত্রী শনিবার রাত কাটাবেন বেলুড় মঠে। আগে ঠিক ছিল, তিনি রাজভবনে থাকবেন। পরে কর্মসূচি বদল করা হয়। তিনি রবিবার সকালে বিবেকানন্দের জন্মদিন উপলক্ষে বেলুড় মঠের সাধুদের সঙ্গে ধ্যানে বসবেন বলে জানিয়েছেন।
মমতা বলেন, ধর্মের ভিত্তিতে ‘অমানবিক’ ও ‘অসাংবিধানিক’ নাগরিকত্ব আইন কোনওভাবেই চালু করতে দেব না। তাঁর ঘোষণা, যারা এখনও নিজেদের ভুল বুঝতে পারছে না, শীঘ্রই তাদের ভুল ভাঙাবে মানুষ। জেগে ঘুমিয়ে থাকলে কারও কিছু করার থাকে না বলে কেন্দ্রকে কটাক্ষ করেন মুখ্যমন্ত্রী।
সভা থেকে সিপিএম ও কংগ্রেসকেও শানিত আক্রমণ করে মমতা বলেন, একদিন বাসে আগুন লাগিয়ে আন্দোলন হয় না। রাস্তায় হাঁটুন, শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করুন, মেদ ঝরান। তিনি ফের জানিয়ে দেন, রাজ্যে তৃণমূল একাই কেন্দ্রীয় আইনের বিরুদ্ধে লড়াই করবে। তবে কোনও আঞ্চলিক দল শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের জন্য সাহায্য চাইলে তিনি তা করতে রাজি আছে।
Comments are closed.