নন্দীগ্রামে সভার সিদ্ধান্ত মমতার, শুভেন্দুর বিধানসভা থেকেই পূর্ব মেদিনীপুরে রাজনৈতিক কর্মসূচি শুরু তৃণমূল নেত্রীর
নন্দীগ্রাম যাচ্ছেন মমতা ব্যানার্জি।
শুভেন্দু অধিকারী আনুষ্ঠানিকভাবে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার আগেই পূর্ব মেদিনীপুরে রাজনৈতিক কর্মসূচি চূড়ান্ত করে ফেললেন তৃণমূল নেত্রী। আর পূর্ব মেদিনীপুরে রাজনৈতিক কর্মসূচি মমতা ব্যানার্জি শুরু করছেন শুভেন্দুর আন্দোলনস্থল নন্দীগ্রাম থেকেই। যেখান থেকে বিধায়কও ছিলেন তিনি। সূত্রের খবর, জানুয়ারি মাসে মুখ্যমন্ত্রী যাবেন নন্দীগ্রামে।
২০০৭ সালের ৩ জানুয়ারি পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রামে জমি অধিগ্রহণের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু হয়। সেই সময় বিরোধী নেত্রী মমতা দীর্ঘ অনশন করে হাসপাতালে ভর্তি। হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে মমতা ছোটেন নন্দীগ্রাম। তারপর থেকে অগুন্তিবার নন্দীগ্রামে গেছেন তৃণমূল নেত্রী। আন্দোলনের মূল চালিকাশক্তি ছিলেন তিনিই।
তারপর গঙ্গা-হলদি নদী দিয়ে বহু জল বয়ে গিয়েছে। সেদিনের বিরোধী নেত্রী মমতা আজ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলেন, সিঙ্গুর ও নন্দীগ্রাম আন্দোলন ছিল তৃণমূলের মহাকরণ দখলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। শুভেন্দুর নেতা শুভেন্দু হয়ে ওঠার পিছনেও প্রধান ভূমিকা নিয়েছেল নন্দীগ্রাম।
২০১৬ বিধানসভা ভোটের আগে নন্দীগ্রামে জনসভা থেকেই মমতা ব্যানার্জি ঘোষণা করেছিলেন, সেখান থেকে ভোটে লড়বেন শুভেন্দু অধিকারী। লোকসভাকে বিদায় দিয়ে শুভেন্দু নন্দীগ্রাম থেকে লড়েন বিধানসভা ভোট। জেতেন এবং দ্বিতীয় মমতা মন্ত্রিসভায় জায়গা পান।
আবার একটি ভোট আসছে। তৃণমূলের সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক ছেদ করে এবার শুভেন্দু বিজেপিতে। শনিবার মেদিনীপুর কলেজ মাঠের সভায় অমিত শাহের হাত থেকে পদ্ম পতাকা তুলে নেবেন তিনি।
বস্তুত নন্দীগ্রাম আন্দোলনের শুরু থেকেই মমতার ছায়াসঙ্গী ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। তৎকালীন তরুণ তুর্কির উপরই ছিল আন্দোলনের ধাত্রীভূমির দেখভালের দায়িত্ব। মমতা ব্যানার্জিও শুভেন্দুর হাতে নন্দীগ্রাম সঁপে নিশ্চিন্ত ছিলেন। কিন্তু পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে এবার সেই শুভেন্দুই বিরোধী শিবিরে। তাই সময় নষ্ট না করে আবার নন্দীগ্রাম যাওয়ার সিদ্ধান্ত মুখ্যমন্ত্রীর। জানুয়ারি মাসের শুরুতেই মমতা সেখানে যাবেন বলে আপাতত ঠিক হয়েছে। এখন প্রশ্ন হল, সেখানে গিয়ে কী বার্তা দেবেন নেত্রী? তৃণমূল-শুভেন্দু লড়াইয়ে কোন দিকেই বা থাকবে নন্দীগ্রাম? অকুস্থলে পৌঁছে সামগ্রিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে চান মমতা ব্যানার্জি।
গত ১০ নভেম্বর নন্দীগ্রামের সমাবেশ থেকে শুভেন্দু হুঙ্কার ছেড়েছিলেন, রাজনীতির ময়দানে দেখা হবে, লড়াইয়ের ময়দানে দেখা হবে। তিনি বিজেপিতে যোগ দেওয়ার আগেই নন্দীগ্রাম যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে নিলেন মমতা। নন্দীগ্রাম থেকেই পূর্ব মেদিনীপুরের ১৬ টি বিধানসভা আসনে রাজনৈতিক লড়াই শুরু করতে চাইছেন তৃণমূল নেত্রী।
Comments are closed.