জনস্বাস্থ্য কারিগরি ও ভূমি দফতর ঘুঘুর বাসা, সব ভাঙতে হবে, বাঁকুড়ার প্রশাসনিক বৈঠকে হুঁশিয়ারি মুখ্যমন্ত্রীর
পিএইচই (পাবলিক হেলথ ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্ট) ও ল্যান্ড ডিপার্টমেন্টে ঘুঘুর বাসা আছে বলে বুধবার বাঁকুড়ার প্রশাসনিক বৈঠকে অভিযোগ করলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রীই। পাশে বসা মুখ্যসচিব রাজীব সিংহ এবং দাঁড়িয়ে থাকা জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের প্রিন্সিপাল সচিব মনোজ পন্থকে মমতা ব্যানার্জি বললেন, দুর্নীতি দমন শাখাকে কাজে লাগিয়ে এই সব ঘুঘুর বাসা ভাঙতে হবে তোমাদের। আমি এর আগেও অনেকবার বলেছি।
এত প্রকল্প থাকা সত্ত্বেও বাঁকুড়ার বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষের এত ক্ষোভ কেন? প্রশাসনিক বৈঠকে দলীয় নেতা-কর্মী ও সরকারি আধিকারিকদের উদ্দেশে প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী।
এদিন পঞ্চায়েত এলাকা ধরে ধরে দলের কর্মীদের কাছ থেকে খোঁজ-খবর নেন মমতা। এই প্রেক্ষিতে দলের এক কর্মীর কাছে তিনি জানতে চান, খাতড়ার স্থানীয় মানুষের এত ক্ষোভ কেন। এর উত্তরে উঠে আসে পিএইচই দফতরের বিরুদ্ধে অভিযোগের কথা। অভিযোগ শুনেই পিএইচই দফতরের প্রিন্সিপাল সচিব মনোজ পন্থকে দাঁড় করিয়ে তোপ দাগেন মুখমন্ত্রী। তাঁর কোপে পড়েন মুখ্যসচিবও। মনোজকে দাঁড় করিয়ে তিনি অনেক কথা বলেন। ওই প্রবীণ আমলা মুখ্যমন্ত্রীর তোপের মুখে পড়ে কোনও কথা বলতে পারেননি।
তৈরির তিন বছরের মধ্যে বাঁকুড়ার সারেঙ্গায় ফতেডাঙা গ্রামের পরিস্রুত পানীয় জল প্রকল্পের ট্যাঙ্ক কিছুদিন আগে ভেঙে পড়ে হুড়মুড়িয়ে। সেই ঘটনার কথা তুলে ধরে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়েন মমতা। তাঁর প্রশ্ন, দু’হাজার কোটি টাকা খরচ করে যে প্রকল্প তৈরি হচ্ছে তার বরাত কোন সংস্থাকে দেওয়া হয়েছে? তিন বছরের মধ্যেই কেন হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ল ট্যাঙ্ক? তিনি অভিযোগ করেন, এই দফতরের জন্য তাঁর সরকারের বদনাম হচ্ছে। পিএইচই দফতর নিয়ে বারবার অভিযোগ আসছে। অফিসাররা কি ঘুমিয়ে থাকেন, প্রশ্ন করেন মুখ্যমন্ত্রী। দফতরের প্রিন্সিপাল সচিব ও মুখ্যসচিবকে উদ্দেশ্য করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বারবার একই কথা বলব না, ‘ইট’স টু মাচ’। যে সংস্থা জলট্যাঙ্ক তৈরির বরাত পেয়েছিল তাকেই অবশিষ্ট কাজ শেষ করতে হবে বলে নির্দেশ দেন মমতা। সেই সঙ্গে ওই সংস্থার বিরুদ্ধে এফআইআর করারও নির্দেশ দিয়ে তিনি বলেন, ভবিষ্যতে যেন তাদের আর কোনও কাজের বরাত না দেওয়া হয়। তাঁর কথায়, এই ঠিকাদারদের জন্যই আমাদের এত সমস্যা। এদেরকে নিয়ন্ত্রণ করুন, প্রয়োজনে বদল করুন।
বাঁকুড়ার আঞ্চলিক তৃণমূল নেতা ও সংগঠকরাও মুখ্যমন্ত্রীর কোপে পড়েন। সরকারি প্রকল্প থাকা সত্ত্বেও কেন মানুষের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হচ্ছে জানতে চান তৃণমূল নেত্রী। অন্যদিকে নেতার কথায় না চলে নিজেদের কর্তব্য পালন করতে পুলিশকে নির্দেশ দেন তিনি।
Comments are closed.