পুরভোট নিয়ে ২ মার্চ দলের বৈঠক ডাকলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামের ওই বৈঠকে রাজ্যের সমস্ত কর্পোরেশনের মেয়র, ডেপুটি মেয়র, পুরসভার চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, কাউন্সিলরদের থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্লক ও ওয়ার্ডের তৃণমূল নেতাদেরও ডাকা হয়েছে।
পরের দিন শুধু কলকাতা কর্পোরেশনের দলীয় কাউন্সিলর নিয়ে আর একটি বৈঠক হবে। তৃণমূল ভবনে ৩ তারিখের বৈঠকে থাকবেন দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী, মহাসচিব পার্থ চ্যাটার্জি, যুব তৃণমূল সভাপতি অভিষেক ব্যানার্জি প্রমুখ। দলীয় সূত্রের খবর, কলকাতার বৈঠকে ভোট-কুশলী প্রশান্ত কিশোরও (পি কে) হাজির থাকতে পারেন।
এপ্রিল মাসের মধ্যেই রাজ্য সরকার কলকাতা-সহ রাজ্যের পুরসভাগুলির ভোট সেরে ফেলতে চায়। দলের অন্দরের খবর, পুরভোট মিটে গেলেই শাসকদল বিধানসভা ভোটের জন্য ঝাঁপিয়ে পড়বে। গত লোকসভা ভোটে বিজেপি ১৮ টি আসন দখল নেওয়ায় নেত্রী আর কোনও ঝুঁকি নিতে চাইছেন না। লোকসভা ভোটের ফল বলছে, কলকাতার অন্তত ৫০ টি ওয়ার্ডে বিজেপি তৃণমূলের থেকে এগিয়ে রয়েছে। আর একশোরও বেশি বিধানসভা কেন্দ্রে বিজেপি এগিয়ে আছে। এর জন্যই লোকসভা ভোটের পরেই নেত্রী ভোট-কুশলী প্রশান্ত কিশোরকে নিয়োগ করেন। তিনি তৃণমূলকে আবার পুরনো জায়গায় ফিরিয়ে আনার জন্য অনেক প্রকল্প, কৌশল গ্রহণ করেছেন। তার মধ্যে অন্যতম হল ‘দিদিকে বল’ কর্মসূচি। দলীয় নেতৃত্বের দাবি, লোকসভা ভোটের পর গত আটমাসে পরিস্থিতি অনেকটাই বদলেছে। তাতেও মমতা খুশি নন। পুরসভা এবং আগামী বিধানসভা ভোটের প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে প্রশান্ত কিশোরের উপর অনেকটাই নির্ভর করছেন। পি কে পুরসভার বর্তমান কাউন্সিলরদের সঙ্গে দফায় দফায় কথা বলেছেন। গত পাঁচ বছরে তাঁদের কোথায় কোথায় কাজের ক্ষেত্রে কতটা ঘাটতি ছিল, তা তিনি চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন। নেত্রীকে রিপোর্টও দিয়েছেন। কলকাতা ও অন্যান্য জেলা কমিটিগুলিকে প্রার্থী তালিকা পাঠিয়ে দিতে বলা হয়েছে। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন মমতাই।
তৃণমূল সূত্রের খবর, ২ মার্চের বৈঠকে নেত্রী পুরভোটের প্রস্তুতি কতটা হয়েছে, তার পর্যালোচনা করবেন। বেশ কিছু কাউন্সিলরের নাম এ ভার বাদ পড়তে চলেছে। সেই ওয়ার্ডগুলিতে সরাসরি তৃণমূলের সঙ্গে সক্রিয় ভাবে জড়িত নয়, এমন কাউকে কাউকে টিকিট দেওয়ার পক্ষপাতী মমতা। পি কে’র সমীক্ষায় ধরা পড়েছে, কয়েকজন কাউন্সিলর দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছেন। কারও কারও বিরুদ্ধে কাজে খামতির অভিযোগ রয়েছে। আবার কয়েকজনের বিরুদ্ধে মানুষের সঙ্গে, এমনকী দলীয় কর্মীদের সঙ্গেও দুর্ব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে। নেত্রী তাঁদের এ বার আর টিকিট দিতে চান না। দলের তরফ থেকে অনেক আগেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, পুরভোটে টিকিট পাওয়া নিয়ে কোনও লবিবাজি, দাদা-দিদি ধরা চলবে না। এই সব বিষয় নিয়েই ২ এবং ৩ তারিখের বৈঠকে নেত্রী আলোচনা করবেন, নির্দিষ্ট বার্তা দেবেন বলে দলীয় সূত্রের খবর।
Comments are closed.