করোনা পরিস্থিতিতে রাজ্যের অর্থনীতিকে সচল করতে ক্ষুদ্র শিল্পের উপর বিশেষ নজর দিয়েছিল মমতা সরকার। কর্মসংস্থানের বৃহত্তর জায়গা করে দিতে ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্প যে বিশেষ ভূমিকা নিতে পারে তা নিজে বিশ্বাস করেন মুখ্যমন্ত্রী। তাই রাজ্য সরকারের হাতে থাকা জমির দাম কমিয়ে ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্পোদ্যোগীদের উৎসাহ দিচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। শিল্পের জন্য সরকারি জমির দামে ছাড় দেওয়া হচ্ছে ঘোষিত দামের ৬৬ শতাংশ পর্যন্ত।
রাজ্য সরকারের আওতায় থাকা ইন্ডাস্ট্রিয়াল ও কমার্শিয়াল এস্টেটগুলির তদারকি করে পশ্চিমবঙ্গ ক্ষুদ্র শিল্প উন্নয়ন নিগম। সেই এস্টেটগুলির পরিকাঠামো তৈরি করে, তা শিল্প সংস্থার হাতে তুলে দেওয়া এই নিগমের মূল কাজ। বহু সংস্থা আছে, যারা অনেক আগে নিগমের জমি লিজে কিনেছিল। কিন্তু সেই জমি বছরের পর বছর পড়ে আছে, শিল্পের দেখা পাওয়া যায়নি। এমন জমি সেই সব সংস্থাগুলির থেকে ফিরিয়ে নিয়ে নতুন করে লিজ দিতে উদ্যোগী হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ ক্ষুদ্র শিল্প উন্নয়ন নিগম।
এছাড়া এস্টেটগুলিতে যে কিছু জমি ফাঁকা পড়ে আছে, তার দামেও ‘রিবেট’ দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়েছে। নিগমের হাতে থাকা ৫০ টির বেশি এস্টেটের মধ্যে ৩২ টি এস্টেটের বেশ কিছু প্লট লিজে দিতে চলেছে তারা। জানা গিয়েছে, জলপাইগুড়িতে একটি শিল্পতালুকে জমির দামে ৩৫ এবং আর একটিতে ১০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় ঘোষিত হয়েছে। মুর্শিদাবাদের একটি শিল্পতালুকে আবার ৫০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় দেওয়া হয়েছে। উত্তর দিনাজপুরে জমির দামে ছাড় সরাসরি ৩০ শতাংশ ছাড়। এছাড়া জমির দামে সবচেয়ে বেশি ছাড় পশ্চিম মেদিনীপুরে, ৬৬ শতাংশ পর্যন্ত। সূত্রের খবর, এলাকা অনুযায়ী শিল্পতালুকগুলিতে ফাঁকা জমির দাম কাঠা পিছু আট লক্ষ টাকা পর্যন্ত ধার্য করা হচ্ছে। বেশি কিছু এস্টেটে বর্গফুট অনুযায়ী দাম ঘোষণা করেছে নিগম। সেখানেও জায়গা পিছু দাম আলাদা আলাদা। সর্বোচ্চ দাম বর্গফুট পিছু ৬ হাজার ৮০০ টাকা।
ক্ষুদ্র শিল্প উন্নয়ন নিগমের চেয়ারম্যান বিপ্লব রায়চৌধুরী জানান, শিল্প সংস্থা যত বেশি জমি নেবে, ছাড়ের পরিমাণও তত বেশি। তিনি বলেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি ছোট শিল্পকে এগিয়ে নিয়ে যেতে উদ্যোগী হয়েছেন এবং তার বাস্তবায়নে বহুমুখী পরিকল্পনা করছেন শিল্পমন্ত্রী অমিত মিত্র। নিগমের এই উদ্যোগে আরও শিল্প সংস্থা উৎসাহী হবে এবং কর্মসংস্থানের পথও প্রশস্ত হবে বলে মনে করছেন নিগমের চেয়ারম্যান।
কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত এক বছরে বাংলায় ৩০ হাজার ২৩১ টি নতুন ছোট ও মাঝারি শিল্প গড়ে উঠেছে। কর্মসংস্থান হয়েছে ২ লক্ষ ৮৯ হাজার মানুষের।
Comments are closed.